কলম্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে ব্রাজিল। ম্যাচটি জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে তো পারেইনি, উল্টো হলুদ কার্ড দেখে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে গেছেন দলের সেরা খেলোয়াড় ভিনিসিউস জুনিয়র। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা মার্সেলো বিয়েলসার উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা তাই ব্রাজিলের জন্য মহাপরীক্ষা। কোপা আমেরিকায় পথচলা জারি রাখতে কোচ দরিভাল জুনিয়র এখন কী করেন, সেদিকে চেয়ে সমর্থকরা।
ব্রাজিলকে দল হিসেবে গুছিয়ে নেয়ার খুব বেশি সময় পাননি দরিভাল জুনিয়র। কোপা আমেরিকার আগে হওয়া চারটি প্রীতি ম্যাচই সম্বল। ফলে খেলোয়াড়দের খুব বেশি বাজিয়ে দেখতে পারেননি। তার অধীনে এখনও দল হিসেবে গুছিয়ে উঠতে পারেনি কোপা আমেরিকার নয়বারের চ্যাম্পিয়নরা। সে জন্য কোয়ার্টার ফাইনালেই উরুগুয়ের মতো দলের মুখোমুখি হতে চাননি তিনি।
কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষেও নামতে হচ্ছে তাদের। মার্সেলো বিয়েলসার অধীনে এবারের কোপা আমেরিকায় অন্যতম ফেবারিট লা সেলেস্তেরা। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচেই জয় পেয়েছে ডারউইন নুনেজ, ফেদে ভালভার্দেরা। কাতার বিশ্বকাপের পর একমাত্র দল হিসেবে হারের স্বাদ দিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকেও। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে সবশেষ দেখায় হারিয়েছে ব্রাজিলকেও। তাই কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলকে আন্ডারডগ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বড় দুশ্চিন্তা ভিনিসিউস জুনিয়রের অনুপস্থিতি নিয়ে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের সপ্তম মিনিটে তাদের অধিনায়ক হামেস রদ্রিগেজকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন ভিনি। এর আগে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচেও হলুদ কার্ড দেখায় এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি। তাই উরুগুয়ের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে পাচ্ছেন না দরিভাল।
কোয়ার্টার ফাইনালে ভিনিসিউসকে ছাড়া দল সাজানো বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে ব্রাজিলের কোচের কারণে। চলতি কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের খেলা মন ভরাতে পারছে না সমর্থকদের। কলম্বিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে হাই প্রেসিংয়ের সামনে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছিল তারা। প্রচুর ভুল পাসে আর বল হারিয়ে বিরক্তিকর ফুটবল উপহার দিয়েছে। ছন্নছাড়া রক্ষণভাগ আর মিডফিল্ডে সমন্বয়ের অভাব। আক্রমণভাগও পারছে না জ্বলে উঠতে। ব্রাজিলকে গোলের জন্য নির্ভর করতে হচ্ছে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের ওপর।
ভিনিসিউসের জায়গায় খেলানোর জন্য ব্রাজিলের কোচের হাতে বেশ কয়েকজন বিকল্প আছেন। তবে দলের সামগ্রিক অবস্থা নিয়েই ভাবতে হবে তাকে। ব্রুনো গিমারেস, জোয়াও গোমেজ ও লুকাস পাকুয়েতাকে নিয়ে গড়া মিডফিল্ড জ্বলে উঠতে পারছে না। ফরোয়ার্ড লাইনে ভিনিকে কড়া মার্কিংয়ে প্রতিপক্ষ আটকে দিলেও ব্রাজিলের আক্রমণভাগ হয়ে পড়ছে ক্লুলেস। কোস্টারিকার বিপক্ষে এমন অবস্থায় ভিনিকে তুলে এনদ্রিককে নামিয়েছিলেন দরিভাল। এন্দরিক মাঠে এসে সেন্টার ফরোয়ার্ড এবং রদ্রিগো ভিনির জায়গা অর্থ্যাৎ লেফট উইংয়ে খেলা শুরু করেও অবস্থার পরিবর্তন আনতে পারেননি। গতকাল কলম্বিয়ার বিপক্ষে রাফিনিয়া শুরুতে মিডফিল্ডে খেললেও পরে রাইট উইংয়ে চলে যান। এমন আকস্মিক ট্রানজিশনেও আসেনি ফল।
তবে বড় ম্যাচে হুট করে ব্যাপক পরিবর্তনের পথে দরিভালের হাঁটার সম্ভাবনা কমই। তাই এ ম্যাচে হয়তো শুরু থেকেই এন্দরিককে খেলাবেন তিনি। সেন্টার ফরোয়ার্ডের ভূমিকায় তাকে দেখা যেতে পায়ে। সে ক্ষেত্রে লেফট উইংয়ে ভিনিসিউসের জায়গা নেবেন রদ্রিগো। ডান প্রান্তে এদিনও রাফিনিয়াকে দেখা যেতে পারে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের সেরা পারফর্মার তিনিই ছিলেন। সেই সঙ্গে রক্ষণেও বেশ সহায়তা করতে পারেন বার্সেলোনার এই উইঙ্গার।
তবে দরিভালের হাতে বিকল্প আছে আরও। গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লির মতো খেলোয়াড়কে কোপা আমেরিকায় এখনও ব্যবহারই করেননি ব্রাজিলের কোচ। আছেন স্যাভিওর মতো তরুণ তুর্কিও। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার সামর্থ আছে তাদেরও।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৪:৩৫ ৩৩ বার পঠিত