কানাডাকে ২-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকা মিশন শুরু করেছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
আটালান্টার মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামে ৭০ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে ম্যাচটি ছিল উত্তেজনায় ঠাসা। বিশেষ করে কানাডার গোলরক্ষক ম্যাক্স ক্রিপিয়ারের নাম আলাদা করে বলতেই হয়। ৩০ বছর বয়সী অভিজ্ঞ এই গোলরক্ষকের উজ্জীবিত পারফরমেন্সে আর্জেন্টিনা ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। ৪৯ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজ আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন। ৮৮ মিনিটে বদলী স্ট্রাইকার লটারো মার্টিনেজের গোলের আগে লিওনেল মেসির দলে স্বস্তি ফিরেনি।
আকাশী নীল-সাদা জার্সিধারী সমর্থকদের উচ্ছসিত চিৎকারের মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনা জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছে। শক্তিমত্তার বিচারে সুস্পষ্ট ফেবারিট আর্জেন্টিনার এই ম্যাচে জয়টা অনুমেয় ছিল। কিন্তু বিশ^ র্যাঙ্কিংয়ে ৪৮তম স্থানে থাকা কানাডা ১৫ বারের কোপা জয়ী আর্জেন্টাইনদের বিপক্ষে যেভাবে লড়াই করেছে তাতে ম্যাচ শেষে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
আক্রমনভাগে মেসির পার্টনার হিসেবে লটারোর স্থানে কোচ লিওনেল স্কালোনি আলভারেজকে এগিয়ে রেখেছিলেন। ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পেয়েছিলেন আলভারেজ। কিন্তু তার প্রচেষ্টাটি কানাডিয়ান মিডফিল্ডার ইসমায়েল কোনে ক্লিয়ার করেন। ম্যানচেস্টার সিটির এই স্ট্রাইকারকে এরপর হতাশ করেন গোলরক্ষক ক্রিপিয়া।
এই ম্যাচের মাধ্যমে কোপা আমেরিকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৫ ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছেন মেসি। এনিয়ে সাতটি কোপা আমেরিকায় খেলছেন মেসি। আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেবার সুযোগ মেসিও হাতছাড়া করেন। বামদিক থেকে তার কোনাকুনি শট পোস্টের অল্প বাইরে দিয়ে চলে যায়। কানাডিয়ার রক্ষনভাগে আর্জেন্টাইনরা প্রায় পুরো ম্যাচেই শাসন করেছে। জেসি মার্শের দল মধ্য মাঠেও কোন প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। তাদের সবগুলো সুযোগই শেষ পর্যন্ত হাফ-চান্স হয়ে থেকেছে।
আলফোনসো ডেভিস ও লিয়াম মিলারের শট বক্সের ভিতর ব্লক হয়। ৩০ মিনিটে টায়োন বুখাননের একটি শক্তিশালী শট পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৪০ মিনিটে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্রস থেকে এ্যালেক্সিস ম্যাক এ্যালিস্টারের হেড দারুনভাবে রুখে দেন ক্রিপিয়া। বিরতির ঠিক আগে রাইট উইং থেকে স্টিফেন এস্তাকুইওর পোস্টের কাছে থেকে শট এমিলিয়ানো মার্টিনেজ রক্ষা না করলে তখনই হয়তো এগিয়ে যেতে পারতো কানাডা।
দ্বিতীয়ার্ধের চার মিনিটের মধে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। মেসি ম্যাক এ্যালিস্টারকে একটি থ্রু পাস দেন। ক্রিপিয়া তাকে আটকাতে গেলে আলভারেজ সেই সুযোগে বল জালে জড়ান। পরের মুহূর্তে আলভারেজ আরো একটি সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার ক্রিপিয়া ডাইভ দিয়ে তা রক্ষা করেন। এসময় ম্যাচে ফিরে আসার তাগিদে কানাডা কিছুটা আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে। উইঙ্গার জ্যাকবকে মাঠে নামিয়ে মার্শ এ্যাটাকিং ফর্মেশনে দলকে ৪-৩-৩’এ বদলে দেন। হঠাৎ করেই আর্জেন্টাইন রক্ষনভাগ চাপে পড়ে। কোনভাবেই তাদের স্বস্তিতে রাখেনি কানাডিয়ান আক্রমনভাগ। যদিও দুর্দান্ত কাউন্টার এ্যাটাক রুখতে গিয়ে কানাডাকে শেষ পর্যন্ত হিমশিম খেতে হয়েছে। মার্টিনেজের একটি লম্বা বল থেকে মেসি অল্পের জন্য স্কোরশিটে নাম লেখাতে পারেননি। তার প্রথম শটটি রুখে দেন ক্রিপিয়া, এরপর ফিরতি শটে সেটি ক্লিয়ার করেন ডেরেক করনেলিয়াস। এরপর ক্রিপিয়াকে একা পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি মেসি। ম্যাচ শেষের দুই মিনিট আগে বদলী খেলোয়াড় লটারোকে আর রুখতে পারেননি ক্রিপিয়া। মেসির আরো একটি অসাধারন পাস থেকে লটারো কোন ভুল করেননি।
দলের স্পিরিটে দারুন সন্তুষ্ট আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনি অবশ্য আটালান্টার মাঠ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছে। কৃত্রিম টার্ফের উপর অস্থায়ী ঘাস লাগয়ে মাঠটিকে নষ্ট করা হয়েছে দাবী স্কালোনির।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৫৫:৫৫ ১৭ বার পঠিত