আগামী অর্থবছরের জন্য যে সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য বলে দাবি করেছেন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।
শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই আইকন ভবনে প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০২৪-২০২৫ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে এফবিসিসিআইয়ের মতামত তুলে ধরতে গিয়ে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, ‘আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে, দেশের জনগণের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাজেটের এই আকার বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য।’
তিনি বলেন, ‘দেশের জিডিপি’র আকার এবং অর্থনীতির পরিকাঠামো বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাজেটের আকারও প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিগত কয়েক বছরে যেখানে প্রায় ১০-১২ শতাংশ হারে বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে, এবার বাড়ানো হয়েছে ৫ শতাংশেরও কম (৪.৪২%)।’
‘বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য দরকার সুশাসন ও যথাযথ মনিটরিং। বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং তদারকির মান ক্রমাগতভাবে উন্নয়নের জন্য সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা ও পরিকল্পনা নিশ্চিত করা জরুরি। এছাড়াও বাজেটে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারি এবং বেসরকারি খাতের অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করতে হবে,’ যোগ করেন তিনি।
মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বাজেটে জিডিপি’র প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ছয় দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ছয় দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জন্যও বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬.৫ শতাংশ। কিন্তু চলতি বছর মে মাসে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.৮৯ শতাংশ।’
‘এ মূল্যস্ফীতির হারকে কমিয়ে এনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ বলে আমরা মনে করি। মূল্যস্ফীতি ঊর্দ্ধগতির লাগাম টেনে ধরতেই হবে। তা না হলে সাধারণ মানুষের কষ্ট ও ভোগান্তি বাড়বে,’ বলেন মাহবুবুল আলম।
তিনি জানান, ‘ভূরাজনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক কারণে আমাদের অর্থনীতিতে এমনিতেই বিরুপ প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার উচ্চ বিনিময় হার, ঋণের সুদের হার, মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রভৃতি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাজেট বাস্তবায়নের সর্বাত্মক চেষ্টা গ্রহণ করতে হবে।’
‘প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপি’র ৯.৭ শতাংশ। জাতীয় বোর্ডের লক্ষ্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য খাত থেকে আসবে ৬৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এ বিশাল রাজস্ব সংগ্রহ করা হবে সরকারের জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। এমনিতেই দেশের সামরিক অর্থনীতির সূচকসহ রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া বিশ্বব্যাপী বিরাজমান কঠিন পরিস্থিতির কারণে চাপের মুখে।’
তিনি বলেন, ‘লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার জরুরি। সেই সঙ্গে ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও বৃদ্ধির জন্য করের আওতা বাড়ানো এবং উপজেলা পর্যন্ত কর অফিস বিস্তৃত করা প্রয়োজন।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫২:০৫ ১৫ বার পঠিত