প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার (৩ জুন) রাজধানীর খামারবাড়িতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সক্ষমতা জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় ৮২ দশমিক ৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে ২টি বেজমেন্টসহ ১০তলা ভিত বিশিষ্ট ৮তলা মূলভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।
এসময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের পথে তার যাত্রা অব্যাহত রেখেছেন। প্রাণিসম্পদের জন্য এধরণের ভবন নির্মাণ তারই বহিঃপ্রকাশ।
মো. আব্দুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মনে, মননে, প্রাণে, ভালোবাসায় সমস্ত কিছুতেই এই জাতি ও দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী সারাক্ষণই দেশ নিয়ে ভাবেন, দেশের মানুষ নিয়ে ভাবেন, প্রাণি নিয়ে ভাবেন। প্রধানমন্ত্রী এদেশকে এমন এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান যেখান থেকে এ দেশ কোনদিন আর পিছনে ফিরবে না, এদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
নানাবিধ পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রাণিসম্পদের উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত জনগোষ্ঠী তৈরির নিমিত্তে দৃষ্টি নন্দন একটি ভবন তৈরি করার ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রী যে আশা নিয়ে করে দিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তা পূরণ করবেন বলে মন্ত্রী এসময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তবে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই ভবন তৈরিকে সামনে রেখে যাতে কোন বাড়তি উৎপাতের জন্ম না হয় সেদিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার এই বাংলাদেশে যারা দেশকে কন্ট্রিবিউট করতে চায়, যারা মানুষকে কন্ট্রিবিউট করতে চায়, যারা প্রাণী সম্পদকে কন্ট্রিবিউট করতে চাই, তাদেরকে স্বাগত জানানো হবে। তবে শেখ হাসিনার এই বাংলাদেশে কোন নষ্ট মানুষের জায়গা হবে না এবং আজকের তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে দৈহিক শক্তি ব্যবহার করে কোন কিছুই করা যাবে না বলে মন্ত্রী এসময় মন্তব্য করেন।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আটটি দপ্তর যদি একসাথে একযোগে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে পারে তাহলে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেটি আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করেন তা আমরা দিতে পারব। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সম্প্রসারন সেবা ত্বরান্বিত ও অধিদপ্তরের কর্মপরিবেশ ও কর্মকর্তা/কর্মচারীদের কর্মদক্ষতা উন্নয়নে ভবনটি বিশেষ অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন নান্দনিক এ ভবনটি নির্মিত হলে সেবাগ্রহীতাদের সেবাপ্রদান আরও সহজতর হবে বলেও তিনি এসময় মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ভবনটির আয়তন প্রায় ১ লাখ স্কয়ার ফিট। ভবনটিতে ২টি বেইজমেন্ট রয়েছে, যেখানে প্রায় ৪৪ টি গাড়ি পার্কিংয়ের সুযোগ থাকবে। এছাড়া ভবনটিতে প্রায় ২২০ জনের মাল্টিপারপাস হলরুম, ৬০ জনের ১ টি কনফারেন্স রুম, ২৫ জনের ১ টি কম্পিউটার ল্যাব, ৬০ জনের ১ টি প্রশিক্ষণ রুমের ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়াও ৩৫ জন মহিলা ও ১২২ জন পুরুষের পৃথক নামাজের ব্যবস্থা, পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক ওয়াশরুম, রিসিপশন, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, ওয়েটিং রুম, সার্ভার রুম, ডে-কেয়ার সেন্টার, ডক্টরস রুম ও ক্যাফটেরিয়ার সু-ব্যবস্থা থাকবে।
ভবনটিতে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক সাবষ্টেশন, জেনারেটর ও ০৪ টি লিফট, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আরবরিকালচার ও ট্রেস গার্ডেনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভবনটির নির্মাণ কাজের পিরিয়ড ধরা হয়েছে ১৮ মাস।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সক্ষমতা জোরদারকরণ প্রকল্পের পরিচালক ডা. মো. আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ) এর মহাসচিব ড. মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান মোল্লা, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন ও অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল এসময় বক্তব্য প্রদান করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৫৮:৩৫ ৩৩ বার পঠিত