ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর বিষপানে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার ২

প্রথম পাতা » ছবি গ্যালারি » ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর বিষপানে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার ২
সোমবার, ৩ জুন ২০২৪



ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর বিষপানে মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার ২

কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুরে স্বামীর ধার আনা টাকা দিতে না পারায় এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে আসছিলেন পাওনাদার ও তার সহযোগীরা। এ পরে লোকলজ্জার ভয়ে একসঙ্গে বিষপান করেন স্বামী-স্ত্রী। এতে স্ত্রী মারা যান। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- উপজেলার সদর ইউনিয়নের হলপাড়া গ্রামের আবু সামারের ছেলে জয়নাল মিয়া ওরফে জয়নাল কসাই এবং তার সহযোগী টাঙ্গালিয়া পাড়া এলাকার মো. শহীদ আলীর ছেলে আলম ওরফে আলম কসাই।

জানা গেছে, গত ২৯ মে দুপুরের দিকে রাজিবপুর উপজেলা সদরের কলেজ পাড়া এলাকার স্বামী জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে ওই গৃহবধূর মৃত্যু হলে সেদিনই থানায় নিহতের মামার তথ্যের ভিত্তিতে একটি ইউডি মামলা হয়। এরপর বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর ৩১ মে রাতে পুলিশের অনুরোধে মৃত আশা খাতুন এর মামা বাদী হয়ে চারজনের নামে রাজীবপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে সেই রাতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান জানান, গত ৩১ মে রাতে মৃত আশা খাতুনের মামা আকবর হোসেন বাদী হয়ে চার জনের নাম উল্লেখ করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে আমরা বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় থেকে পৃথকভাবে জয়নাল ও আলমকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম জানান, রাজিবপুর থানায় ধর্ষণ মামলার প্রধান অভিযুক্ত দুজনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এ ঘটনায় যেই জড়িত থাক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, স্বামী-স্ত্রীর বিষপানের ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যুর পর ভুক্তভোগী নারীর স্বামী জাহাঙ্গীর আলম ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংসারে অভাব অনটনের কারণে জহির মন্ডলপাড়া গ্রামের জয়নাল আলীর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা ধার নেন জাহাঙ্গীর-আশা দম্পতি। কিন্তু ধারের টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদার বাড়িতে এসে টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। সে সময় হাতে টাকা না থাকায় নিহত আশা খাতুন টাকা হলে পরিশোধ করে দেয়ার কথা জানায়।

কিন্তু পাওনাদার তার টাকাটা পুনরায় চেয়ে বসে এবং টাকা না দিতে পারায় আশা খাতুনকে শারীরিকভাবে অবৈধ সম্পর্কের প্রস্তাব দেয়। আশার পরিবার অভাবগ্রস্ত হওয়ায় পাওনাদারের অনৈতিক কাজের প্রস্তাব মেনে নেন।

পরবর্তীতে জয়নাল তার সহযোগী শুক্কুর আলীকে সঙ্গে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। এরপর তারা দুজন আবারও সোলেমান নামের আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে এসে শারীরিক সম্পর্ক করেন এবং সোলেমান গোপনে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরে তাকেও যদি শারীরিক সম্পর্ক করতে না দেয় তাহলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সেও শারীরিক সম্পর্ক করে।

এভাবে প্রায় সময় ভুক্তভোগী আশা খাতুনের বাড়িতে শারীরিক সম্পর্ক করতে আসায় সে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। পাশাপাশি তার স্বামী জাহাঙ্গীর স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের কথা লোকমুখে জানতে পারেন। পরে কৌশলে স্বামী তার স্ত্রীর মুখে সবকিছু শুনে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করেন। পরে স্বামী স্ত্রী মিলে লোকলজ্জার ভয়ে গত ২৪ মে দুপুরে জমিতে দেয়া কীটনাশক পান করেন। পরে স্থানীয়রা তাদের দুজনকেই উদ্ধার করে রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসায় জাহাঙ্গীর কিছুটা সুস্থ হলেও আশা খাতুনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে জামালপুর সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন।

সেখানে তিনদিন চিকিৎসার পর আশা খাতুনের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে পরিবারের লোকজন গত ২৮ মে রাতে বাড়িতে নিয়ে আসেন। পরদিন বুধবার (২৯ মে) দুপুর আনুমানিক ২টায় আশা খাতুন তার নিজ বাড়িতে মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৪২:১৭   ১৩ বার পঠিত  




ছবি গ্যালারি’র আরও খবর


আজকের রাশিফল
আল কোরআন ও আল হাদিস
ইহকাল ও পরকালের কল্যাণের জন্য শিক্ষা গ্রহন করতে হবে - মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন
নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা দেশের মানুষ মানবে না: টিপু
রাঙ্গামাটিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারীদের কৃষি ও হস্ত শিল্পের প্রদর্শনী



আর্কাইভ