গাজার অন্যান্য অংশ থেকে পালিয়ে এসে রাফায় আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিদের একটি শিবিরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে অন্তত ৩৫ জন জ্যান্ত পুড়ে মারা গেছেন এবং আরো অনেকে আহত হয়েছেন।
সোমবার ফিলিস্তিনের গণমাধ্যম ওয়াফার উদ্ধৃতি দিয়ে সিনহুয়া এই খবর জানায়।
নিরাপদ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত তাল আস-সুলতান এলাকায় তাঁবুর ভেতরে থাকা অনেক ফিলিস্তিনি ‘জ্যান্ত পুড়ে’ মারা গেছেন
ওয়াফার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতের সংখ্যা ৪০। নিহতদের প্রায় সবাই আগুনে পুড়ে মারা গেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, রোববার স্থানীয় সময় রাত পৌনে নয়টার দিকে অন্তত আটটি ক্ষেপণাস্ত্র এই শিবিরে আঘাত হানে।
রাফা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত ব্রিক্স ক্যাম্প ছিল এই হামলার লক্ষ্যবস্তু। ২৪ মে আকাশ থেকে ধারণ করা ছবিতে দেখা গেছে এই অঞ্চলে শত শত তাঁবু খাটিয়ে ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিয়েছেন। এই এলাকার কাছেই জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার গুদাম।
এরআগেই বেশ কয়েক মাস পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাস রাফা অঞ্চল থেকে আটটি রকেট নিক্ষেপ করেছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) রাফায় গণহত্যামূলক হামলা বন্ধের নির্দেশ দিলেও ‘এই নির্দেশে সামরিক অভিযান বন্ধের স্পষ্ট নির্দেশ নেই’, এই অজুহাত দেখিয়ে স্থল ও বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।’
ইসরায়েল আরও দাবি করেছে, এই হামলায় পশ্চিম তীরে হামাসের চিফ অব স্টাফ ও অপর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এই দুই হামাস নেতা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার জন্য দায়ী ছিলেন বলে দাবি করেছে তেল আবিব।
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইসরায়েল ‘অবগত আছে যে এই হামলার ফলে রাফার ঐ অঞ্চলে ‘বেশ কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন’ এবং এই অভিযোগ তারা ‘যাচাই’ করছে।
ফিলিস্তিনি দমকল বাহিনী ৪৫ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি জানিয়েছে, রাফায় তাদের ফিল্ড হাসপাতালে আহত মানুষের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে এবং অন্যান্য হাসপাতালেও ভুক্তভোগীদের ভিড় বেড়েছে।
রাফার কুয়েতি হাসপাতালে চিকিৎসারত এক ফিলিস্তিনি সিনহুয়াকে জানায়, ‘বিমান হামলায় যাচ্ছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে, ‘১০-১২ জন বা তারচেয়েও বেশি’ আহত ব্যাক্তিকে এবং ১৫ জন নিহত ফিলিস্তিনির মরদেহ তাদের সমর্থনপুষ্ট একটি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।
সংস্থাটি গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চালুর দাবি জানানোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছে, ‘আমরা এই ভয়ঙ্কর ঘটনায় আতঙ্কিত। এতে আবারও প্রমাণ হলো গাজায় কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০৮:০৩ ১৪ বার পঠিত