গাজার দক্ষিণের শহর রাফায় ইসরাইলের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৮ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শনিবার ( ১৮ মে) এক বিবৃতিতে গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনিরা নিরাপত্তার জন্য অনেকবার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে, কিন্তু তারা কখনও একটা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়নি। এমনকি ইউএনআরডব্লিউএ থেকেও তেমন কোনো আশ্রয়কেন্দ্র খুঁজে পায়নি।
তিনি আরও বলেন, বাস্তুচ্যুত হওয়ার সময় মানুষ তার সঙ্গে তেমন কিছুই নিতে পারে না। কোনো নিরাপত্তা বা সুরক্ষা ছাড়াই তাকে পথে নামতে হয়। তখন কিছু না কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস তারা পেছনে ফেলে যায়। যেমন: গরম কাপড়, রান্নার সরঞ্জাম, তাঁবু আরও অনেক কিছু। এগুলো তারা বহন করতে পারে না বা স্থানান্তরের খরচও মেটাতে পারে না। প্রত্যেকবার তাদের শূন্য থেকে শুরু করতে হয়।
শনিবার (১৮ মে) শুধু রাফাতে নয়, গাজাজুড়ে তীব্র লড়াই হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দিনের শুরুতে জানিয়েছিল যে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজাজুড়ে ইসরাইলের সহিংসতা জোরদার হওয়ার পর সেখানকার মানবিক সংস্থাগুলো সতর্কতা জারি করেছে যে, রাফার পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের জন্য কোথাও কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।
গত সপ্তায় ইসরাইলি বাহিনী রাফা ক্রসিংটি দখল করে যা গাজাকে মিসরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। এই গেটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর হাজার হাজার অসুস্থ ও আহত ফিলিস্তিনি আটকা পড়েছেন যারা হয়তো বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার জন্য গাজা ছাড়ার সুযোগ পেতেন।
ইসরাইলের হামলা শুরু হওয়ার আগে রাফায় দেড় লাখ ফিলিস্তিনি বাস করতেন। যাদের অধিকাংশই গাজার অন্যান্য অংশ থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে এসেছিলেন।
যুদ্ধের পুরো সময়টায় ইসরাইল গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের দক্ষিণে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কারণ, তারা উত্তর থেকে হামলা শুরু করেছে।
অনেক বাসিন্দা প্রথমে গাজার মধ্যবর্তী অংশে আশ্রয় নেয় তারপর দক্ষিণের শহর খান ইউনিসে চলে যায়। তারা শেষ পর্যন্ত আবার রাফাতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এখন রাফা থেকে লোকজন উত্তর দিকে পালাচ্ছে।
রাফাকে হামাসের শেষ ঘাঁটি বিবেচনা করে সেখানে হামলা তীব্র করেছে ইসরাইলি বাহিনী। কিন্তু সেখানে হামলা করার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরের জাবালিয়া এবং অন্য শহরগুলোতেও লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৮:৫৬ ২৫ বার পঠিত