একটি শহরের সুস্থ ও বাসযোগ্য পরিবেশের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সবুজের প্রয়োজন। শহরে যে এলাকায় গাছ বেশি সে এলাকায় তাপমাত্রা কম। তাই তাপমাত্রা সহনীয় রাখতে ঢাকায় নগর বনায়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা জরুরি।
আজ রবিবার (১২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জলবায়ু কর্মপরিকল্পনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দাদের জন্য একটি নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শহরের জন্য ঢাকার প্রথম জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়। একই সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে এক ঢাকা ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী সাবের চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকার জন্য বিশেষ স্যাটেলাইট ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে কোথায় গাছ লাগাতে হবে তা নির্ধারণ করা হবে। পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও প্রাণবন্ত ঢাকা গড়তে জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ঢাকায় দুটি সিটি করপোরেশন থাকলেও এক ঢাকা হিসেবে এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। দুই কোটি মানুষের নগরীতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকে এক ঢাকা ঘোষণা সময়োপযোগী। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে।’
এ সময় মন্ত্রী চৌধুরী তার বক্তৃতায় ঢাকার জলবায়ু কর্মপরিকল্পনার প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ঢাকাসহ সারাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল এবং সবুজ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোকে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ.এস.এম. মাকসুদ কামাল; ব্রিটিশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাই কমিশনার ম্যাট ক্যানেল; সি৪০ শহরের নির্বাহী পরিচালক মার্ক ওয়াটস; ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জায়েদা খাতুনসহ সরকারী কর্মকর্তা, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারগণ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ভারী এবং আকস্মিক বৃষ্টিপাতের ফলে জলাবদ্ধতা এবং নিষ্কাশনের যানজট, প্রচণ্ড গরমের ঘটনা এবং ডেঙ্গুর মতো ভেক্টর বাহিত রোগের বিস্তারের ঝুঁকি স্থানীয়ভাবে বেড়েছে। ঢাকা উত্তর সবসময় এই অঞ্চলে জলবায়ু বিষয়ে পথ দেখিয়েছে। ঢাকার জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা যার মধ্যে রয়েছে শহরব্যাপী তাপ স্থিতিস্থাপকতা, স্বাস্থ্যসেবা, পানি সরবরাহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থা উন্নত করার দৃঢ় লক্ষ্য।
এ সবের মাধ্যমে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) শহরব্যাপী নির্গমন কমাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শহরটিকে আরো বাসযোগ্য, জলবায়ু সহনশীল এবং পরিবেশবান্ধব হবে। ডিএসসিসি তার কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে এবং টেকসইতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। আমরা জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি বড় মানবিক সংকট হিসেবে বিবেচনা করে পরিবেশ রক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়ে কৌশলগত ব্যবস্থা নিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৪:১৭ ২১ বার পঠিত