রেলিগেশনের দ্বারপ্রান্তে থাকা নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ২-০ গোলে পরাজিত করে শিরোপা লড়াইয়ে টিকে থাকলো ম্যানচেস্টার সিটি। লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা আর্সেনালের থেকে এখন তাদের পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র এক। মিকেল আর্তেতার আর্সেনাল টটেনহ্যাম হটস্পারকে আগের ম্যাচে ৩-২ গোলে পরাজিত করে অল্প সময়ের জন্য এই ব্যবধান চারে নিয়ে গিয়েছিল।
ইংলিশ লিগে টানা রেকর্ড টানা চতুর্থবারের মত শিরোপা জয়ের স্বপ্নে বিভোর সিটিকে জয় উপহার দিয়েছেন জাসকো গাভারডিওল ও আর্লিং হালান্ড। পুরো ম্যাচে দারুন উজ্জীবিত ফরেস্ট শেষ পর্যন্ত হার এড়াতে পারেনি।
সিটি ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসকে বলেছেন, ‘এটা কঠিন একটি ম্যাচ ছিল। ফরেস্ট অনেক সাহসী ম্যাচ খেলেছে। তাদের খেলোয়াড়রা অত্যন্ত দ্রুত গতির এবং মান সম্পন্ন। তাদের ১০ জনের বিপক্ষে আমরা গোল আদায় করেছি (সিটির প্রথম গোলের সময় ফরেস্টের ওয়েলস ডিফেন্ডার নেকো উইলিয়ামস চিকিৎসা গ্রহণ করতে মাঠের বাইরে গিয়েছিলেন)। এবারের লিগে যে কয়টি ভাল জয় আমরা পেয়েছি এটা তার মধ্যে অন্যতম। এখন পুরো এক সপ্তাহ আমরা রিকভারের জন্য সময় পাচ্ছি।’
টেবিলের ১৭তম স্থানে থাকা ফরেস্ট রেলিগেশন থেকে রক্ষা পেতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কাল ক্রিস উড দুটি সুবর্ন সুযোগ নষ্ট না করলে ম্যাচের ভাগ্য পরিবর্তিত হতে পারতো।
মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র চার ম্যাচ বাকি। সিটি এখনো লিগ শিরোপা জয়ে ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ভিারপুল সিটির তুলনায় চার পয়েন্ট পিছিয়ে রেয়ছে। সিটির চেয়ে এক ম্যাচ বেশী খেলাতে কার্যত লিগ শিরোপা দৌড় থেকে রেডসরা ছিটকে গেছে।
গত মাসে প্রিমিয়ার লিগের ফিনান্সিয়াল আইন ভঙ্গের দায়ে ফরেস্টের চার পয়েন্ট কর্তন করা হয়েছে। রেলিগেশন জোন থেকে তারা মাত্র এক পয়েন্ট দুরে রয়েছে, হাতে রয়েছে আর তিন ম্যাচ।
সব ধরনের প্রতিযোগিতায় গার্দিওলার সিটি ৩০ ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে। সিটি রাউন্ডে কাল পুরো ম্যাচে তাদের স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি ফরেস্ট। স্বাগতিকরা প্রথম মিনিটেই এগিয়ে যাবার সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু উইলিয়ামস পোস্টের খুব কাছে থেকেও বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন। ৩২ মিনিটে অবশ্য এগিয়ে যায় সিটিজেনরা। কেভিন ডি ব্রুইনার কর্ণার থেকে গাভারডিওলের শক্তিশাী হেডে সিটি লিড নেয়। পিছিয়ে পড়েও অবশ্য থেমে থাকেনি ফরেস্ট। সফরকারীদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। পোস্টের কাছে থেকে উড সমতা ফেরনোর সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন। বদলী খেলোয়াড় গনজালো মন্টিয়েলের পাস তিনি নিয়ন্ত্রনে নিতে পারেননি।
বিরতির পর দুটি পরিবর্তন করেন গার্দিওলা। কাঁধের সমস্যার কারনে গোলবারে এডারসনের জায়গায় স্টিফান ওরতেগা ও জেরেমি ডকুর জায়গায় মাতেও কোভাচিচকে মাঠে নামানো হয়। কিছু সময়ের জন্য ফরেস্ট ম্যাচের নিয়ন্ত্রন হারালেও এন্টনি এলানগার পাসে উড আবারো গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। দ্বিতীয়ার্ধে সিটি ব্যবধান বাড়ানোর জন্য আরো বেশী আগ্রাসী হয়ে উঠে। সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ফর্মহীনতায় ভুগতে থাকা হালান্ড ৬২ মিনিটে জ্যাক গ্রীলিশের স্থানে মাঠে নামেন। ৭১ মিনিটে তিনি সিটির ব্যবধান দ্বিগুন করেন। ডি ব্রুইনার থ্রু বল থেকে তিনি প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমের ২১তম গোল করে সিটিকে জয় উপহার দেন।
হালান্ডের এই গোলে সিটির গুরুত্বপূর্ণ ও স্বস্তির জয় নিশ্চিত হয়। ইনজুরির কারনে আগের দুই ম্যাচে খেলতে না পারা হালান্ড বলেছেন, ‘এটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ একটি জয় ছিল। কিভাবে এই জয় এসেছে সেটা মূখ্য নয়, তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা জানতাম ম্যাচটাতে লড়াই হবে। এই মাঠ কখনই খেলার জন্য সহজ নয়। কিন্তু এজন্য আমরা অভিযোগ করছি না। সব কিছু মূলে হচ্ছে জয়, আমরা সেটাই করে দেখিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৯:৪৫ ১৭ বার পঠিত