বিশ্বজুড়ে দেশগুলো শনিবার গভীর রাতে ইসরায়েলে ইরানের হামলার নিন্দা জানিয়েছে। দেশগুলোর নেতারা বলেছেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলবে বলে সতর্ক করেছে।
প্রধান প্রধান পরাশক্তির প্রতিক্রিয়া:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া: মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকের পর ইসরায়েলের প্রতি ‘নিরবিচ্ছিন্ন’ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসে বৈঠকের একটি ছবি পোস্ট করে এক্স-এ বাইডেন বলেছেন, ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের সর্বশেষ হামলার জন্য আমি এইমাত্র আমার জাতীয় নিরাপত্তা দলের সাথে বৈঠক করেছি। ইরান এবং এর প্রক্সিদের কাছ থেকে হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি নিরবিচ্ছিন্ন।’
ব্রিটেনের প্রতিক্রিয়া: ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এক বিবৃতিতে এই হামলাকে ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এই হামলা অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধি ও অস্থিতিশীল করার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।’
ইইউ:ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল এক্স-এ এক বার্তায় এই হামলাকে ‘নজিরবিহীন আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি’ বলে নিন্দা জানিয়েছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ‘ইসরায়েলের ওপর ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের বড় আকারের হামলার ফলে অঞ্চলটিতে উত্তেজনা বৃদ্ধির’ নিন্দা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি একটি ধ্বংসাত্মক অঞ্চলব্যাপী উত্তেজনা বৃদ্ধির সত্যিকারের বিপদ সম্পর্কে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’
তিনি মধ্যপ্রাচ্যেকে একাধিক ফ্রন্টে বড় ধরনের সামরিক সংঘর্ষের দিকে পরিচালিত করতে পারে, এমন কোনও পদক্ষেপ এড়াতে দলগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন।
কায়রোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বৈরিতা ও হামলা বৃদ্ধিতে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে এবং ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের জন্য সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরব: সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘সামরিক বৃদ্ধি’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি জারি করে ‘সকল পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন করার এবং এই অঞ্চল ও এর জনগণকে যুদ্ধের বিপদ থেকে রক্ষা করার’ আহ্বান জানিয়েছে।
দেশটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য তার দায়িত্ব পালনের করার’ আহ্বান জানিয়েছে।
ফ্রান্স: ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন সেজর্ন অন এক্স বলেছেন, ‘এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে ইরান তার অস্থিতিশীলতার কাজে একটি নতুন স্তরে পৌঁছেছে এবং একটি সামরিক শক্তি বৃদ্ধির ঝুঁকি নিচ্ছে।’
জার্মানি: বার্লিনের শীর্ষ কূটনীতিকও সতর্ক করে জানান, এই হামলা গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।
তিনি, তেহরানকে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এক্স-এ আরো বলেন, ‘আমরা চলমান হামলার নিন্দা জানাই, যা একটি সমগ্র অঞ্চলকে বিশৃঙ্খলার মধ্যে নিমজ্জিত করতে পারে। ইরান ও এর প্রক্সিদের অবিলম্বে এটি বন্ধ করতে হবে। জার্মানি ইসরায়েলের পক্ষে দৃঢভাবে অবস্থান করছে।’
কানাডা: কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো অটোয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘কানাডা ইরানের বিমান হামলার দ্ব্যর্থহীন নিন্দা করছে। আমরা ইসরায়েলের পাশে আছি।’
আর্জেন্টিনা:আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলির কার্যালয় এক বিবৃতিতে হামলার মুখে ইসরায়েলের প্রতি তার ‘সংহতি ও অটুট প্রতিশ্রুতি’ ব্যক্ত করেছে।
ইতালি: ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেছেন, ‘ইতালি মনযোগ ও উদ্বেগের সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং যেকোন ধরনের পরিস্থিতি পরিচালনা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’
মেক্সিকো: মেক্সিকো সরকার বলেছে, এটি ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োগের নিন্দা করে এবং একটি বিস্তৃত আঞ্চলিক সংঘাত এড়াতে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন ও উদ্ভূত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৯:৩৮ ১৬ বার পঠিত