পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি তথা বিজু, সাংগ্রাই, বৈসুক, বিষু, বিহু। ১২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাতিসত্তা এই উৎসবটি পালন করে থাকে। ৩ দিনব্যাপী এই উৎসবে রয়েছে ফুল বিজু, মূল বিজু এবং নতুন বছর। এই উৎসবকে প্রাণবন্ত এবং তাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে রাঙামাটির নানিয়ারচরে চাকমা সম্প্রদায়ের প্রায় ৬ শতাধিক মানুষ নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে উৎসব মুখর পরিবেশে চেঙ্গি নদীতে ফুল ভাসিয়ে ‘ফুল বিজু’ উদযাপন করেছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলাবাসীর যৌথ উদ্যোগে উপজেলা সদরের পুরাণ বাজার এলাকা সংলগ্ন চেঙ্গী নদীতে গঙ্গা মা’র উদ্দেশ্যে ফুল ভাসিয়েছেন তারা। এর আগে উপজেলার টিএন্ডটি বাজার থেকে একটি বিজু র্যালি বের হয়ে পুরাণ বাজারে গিয়ে শেষ করে। পরবর্তীতে স্বল্প পরিসরে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও ২নং সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পি চাকমার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা।
এ সময় নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিমুল এহসান খান, উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা রিয়া চাকমা, উপজেলা ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) এর সমম্বয়ক এবং চাকমা উপজেলা জেএসএস (এমএনলারমা) সাংগঠনিক সম্পাদক রুপম দেওয়ান উপস্থিত ছিলেন।
ফুল ভাসাতে আসা শতাব্দী চাকমা বলেন, প্রতিবছর এদিনটি আমাদের মাঝে একবার করে আসে। এদিনটির জন্য আমরা সকলেই উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষা করে থাকি। আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে বিভিন্ন ধরনের ফুল সংগ্রহ করেছি। পরে বন্ধু-বান্ধব মিলে আনন্দ-উৎসব করে নিজেদের সংস্কৃতির পোশাক (পিনন-হাধি) পরিধান করে ফুল ভাসিয়েছি।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর এদিনে (এপ্রিল ১২তারিখ) পার্বত্য এলাকায় বিজু উদযাপন করা হয়। মূলত পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছর যেন সবার মঙ্গল বয়ে আনে তার জন্য গঙ্গা মা’র উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন। কেউ কেউ আবার উপগুপ্ত ভান্তের উদ্দেশ্যেও প্রার্থনা করে থাকেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৮:৫৮ ২১ বার পঠিত