সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষা ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (পার্বত্য জেলা বাদে) ২১ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ৬ হাজার ২০২টির বিপরীতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৯৩জন। এ পরীক্ষা মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪১৪টি।
বৃহ্স্পতিবার (২১ মার্চ) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
সচিব বলেন, মৌখিক পরীক্ষা সম্ভব্য তারিখ ৫ থেকে ২০ মে এবং চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে ১০ জুন। আর জুলাইয়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত হবে ১:৩০।
তিনি জানান, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ দুটিতে অন্যান্য বিভাগের চেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি। তাই পরীক্ষার সুষ্ঠু করতে একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে। পরীক্ষার দিন প্রতিটি কেন্দ্র একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে।
সচিব বলেন, প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য কাগজপত্র সম্বলিত ট্রাংক ঢাকা থেকে গ্রহণ, জেলার ট্রেজারিতে সংরক্ষণ এবং উত্তরপত্র ঢাকায় পাঠানোর ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কোনো জেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকলে বিভাগীয় কমিশনার প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে পারেন। ম্যাজিস্ট্রেরিয়াল ক্ষমতা সম্পন্ন কর্মকর্তাদের ক্ষমতা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছে-বলেও জানান সচিব ফরিদ আহাম্মদ।
তিনি জানান, পরীক্ষার দিন প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ ফোর্স (মহিলা পুলিশসহ) নিয়োগের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। পরীক্ষার দিন কেন্দ্রসমূহে টহল প্রদান করবে র্যাব।
তিনি আরও জানান, পরীক্ষার্থীরা যাতে কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক্স কমিউনিকেটিভ ও ডিভাইস নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে মেটাল ডিটেক্টর সরবরাহ ও স্থাপন করবে পুলিশ। পরীক্ষার্থীদের শরীর তল্লাশি করার জন্য মহিলা কেন্দ্রে মহিলা পুলিশ ও পুরুষ কেন্দ্রে পুরুষ পুলিশ ফোর্স নিয়োজিত থাকবে।
ফরিদ আহাম্মদ জানান, পরীক্ষার সময় প্রশ্ন ফাঁসের গুজব ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মনিটরিং করতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপর থাকবে এবং আইন শৃঙ্খলাবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য নিয়ে মাঠে তৎপত থাকবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রে কোনো বই, উত্তরপত্র, নোট বা অন্য কোনো কাগজপত্র, ক্যালকুলেটর, মুঠোফোন, ভ্যানিটি ব্যাগ, পার্স, হাতঘড়ি বা ঘড়িজাতীয় বস্তু, ইলেকট্রনিক হাতঘড়ি বা যে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কমিউনিকেটিভ ডিভাইস, জাতীয় পরিচয়পত্র (স্মার্ট কার্ড) ছাড়া কোনো প্রকার ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড অথবা অন্য কোনো কার্ড বা এ-জাতীয় বস্তু সঙ্গে নিয়ে প্রবেশ করা বা সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কোনো পরীক্ষার্থী এসব দ্রব্য সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশ করেন, তবে তাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারসহ সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য গত ১৮ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আবেদন শুরু হয়েছিল ২৪ জুন, আবেদনের শেষ সময় ছিল ৮ জুলাই। প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে এবারই প্রথম আবেদন ও নিয়োগ পরীক্ষা ধাপে ধাপে নেওয়া হচ্ছে। গুচ্ছভিত্তিক এ নিয়োগে তিন ধাপে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষাও আলাদাভাবে নেওয়া হচ্ছে।
সচিব জানান, ২০২৪ সালে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে ১৩ হাজার ৭৮১ জন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগে ২ হাজার ৪৯৭ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ২৭ ফেব্রুয়ারি চুড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
দ্বিতীয় ধাপে রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৫ হাজার ৮৩ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার লক্ষ্যে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষা হয়। মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ শেষে আগামী ৩০ মে এ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৮:০৪ ২২ বার পঠিত