শিশু নূরী ও বর্ষা মায়ের মুক্তির অপেক্ষায় আদালতের বারান্দায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদিকে আদালত প্রাঙ্গনে ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় তাদের মা হাফসা খাতুন পুতুলের জামিন, বিষয়ে আদেশ মঙ্গলবার দেবেন বলে জানিয়েছেন বিচারক। হামলার ফুটেজসহ তদন্ত কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন।
সোমবার (৪ মার্চ) বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
গত বছরের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নাশকতার মামলায় কারাগারে থাকা হাফসা আক্তারের জামিন চাইতে হাইকোর্টে এসেছে মায়ের মুক্তির জন্য মানবন্ধন করে আলোচনায় আসা চার বছরের শিশু নূরজাহান নূরী ও তার বোন বর্ষা।
আজ আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহিন আহমেদ খান।
আজ আদালতে নূরী ও বর্ষা সাংবাদিকদের বলেন, কারাগারে গিয়ে মাকে দেখে আসি, কিন্তু ধরতে পারি না।
এর আগে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে মায়ের মুক্তি দাবি করে এ দুই শিশুকন্যা। রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে দাদা-দাদির হাত ধরে আসে দুই অবুঝ শিশু বর্ষা ও নূরী। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে কারাবন্দি মায়ের জন্য মুক্তি দাবি করে শিশু বর্ষা মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলে, আমার মাকে ছেড়ে দেন। আমার পরীক্ষা। আমি মাকে ছাড়া স্কুলে যেতে পারি না।
এ সময় পাশে থাকা বৃদ্ধা দাদি বলেন, আমার ছেলে আবদুল হামিদকে না পেয়ে পুত্রবধূ পুতুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার নামে তো কোনো মামলা নেই। আমার পুরো পরিবার বিএনপি করে-এটাই অপরাধ। দুটি দুধের শিশুকে আমি সামলাতে পারি না। সারারাত ঘুমাতে পারি না। বোন ও দাদি যখন কথা বলছিলেন তখন অঝোরে কাঁদছিল ছোট্ট শিশু নূরী। তার কান্নার জবাব দেয়ার ভাষা ছিল না কারও।
ওইদিন তিন ছেলের গ্রেফতারের বর্ণনা দিয়ে পিতা আব্দুল হাই বলেন, আমার তিন সন্তানকে কারান্তরীণ করা হয়েছে। এক ছেলেকে ১০ বছর সাজা দেয়া হয়েছে। বড় ছেলেকে না পেয়ে তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুত্রবধূকে তিনদিনের রিমান্ডেও নিয়েছে পুলিশ। অথচ, আমার ছেলের বউ রাজনীতিতে জড়িত নন।
গ্রেফতার আতঙ্ক বিএনপির কর্মী আবদুল হামিদ ভূঁইয়া পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মা হাফসা আক্তার নাশকতার মামলায় গ্রেফতার। মা–বাবার জন্য কাঁদছে শিশু নূরজাহান আক্তার নূরী ও বর্ষা।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২২:২১ ৩৩ বার পঠিত