কক্সবাজার সফররত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও চার্জ দ্য এফেয়ার্স এবং আন্তুর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানগণ আজ বুধবার রামুতে অবস্থিত ঐতিহাসিক রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ তীর্থস্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় ২ হাজার ৩০০ বছরের পুরানো মহামতি বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান দেখে কূটনীতিকরা বিমোহিত হন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী ‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এর শেষ দিনে আজ রাষ্ট্রদূতগণ কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এর আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে ‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ এ কূটনীতিকগণ চট্টগ্রামের নেভাল একাডেমি এবং কর্ণফুলী টানেল পরিদর্শন শেষে বিশেষ ট্রেনে চড়ে কক্সবাজার পৌঁছান।
রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ তীর্থস্থানে অতিথিদের স্বাগত জানান বিহারাধ্যক্ষ কে শ্রী জ্যোতিসেন মহাথেরো। তিনি কূটনীতিকদের সামনে বিহারের ঐতিহাসিক বিবরণ উপস্থাপন করেন। বিহারাধ্যক্ষ এই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বহুকালের ঐতিহ্য মিশন প্রধানদের জানান।
পরিদর্শনকালে মিশন প্রধানগণ বুদ্ধাস্থি সংবলিত ঋদ্ধিময় বুদ্ধবিম্ব পরিদর্শন করেন এবং সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা বিহারের বিভিন্ন স্থানে সংরক্ষিত বৌদ্ধ পুরাকীর্তিগুলো ঘুরে দেখেন। পরে অতিথি কূটনীতিকদের সম্মানে স্থানীয় শিশু-কিশোররা গান ও নৃত্য পরিবেশন করে। স্থানীয় পিঠাপুলি আর ফলমূল দিয়ে কূটনীতিকদের আপ্যায়ন করা হয়।
কক্সবাজার সফরের অনুভূতি প্রকাশকালে বিভিন্ন মিশনের প্রধানগণ বাংলাদেশের পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনার কথা জানান। ‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ বাংলাদেশের পর্যটনের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তারা মত দেন। বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সারা বিশ্বের জন্য একটি অসাধারণ নজির বলে তারা উল্লেখ করেন।
বিহারাধ্যক্ষ জ্যোতিসেন ‘অ্যাম্বাসেডরস আউটরিচ প্রোগ্রাম’ আয়োজনের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান। এ ধরনের কর্মসূচি বিদেশিদের নিকট বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা আরও উঁচু করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
পরে কূটনীতিকরা কক্সবাজারের লাবণী ট্যুরিস্ট মার্কেট পরিদর্শন করেন। তারা সেখানে বিভিন্ন হস্তশিল্পজাত পণ্যের দোকান ঘুরে দেখেন এবং স্যুভেনির কেনেন। অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. নজরুল ইসলামসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে কূটনীতিকগণ ঢাকায় ফিরেন।
উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক-সহ বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ২৪ জন মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক সদস্য এই আউটরিচ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৬:৪৮ ৪৭ বার পঠিত