গোপালগঞ্জ শহরের সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ শিক্ষার বিস্তার ঘটাচ্ছে।মানসম্মত শিক্ষা পেয়ে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছেন।
এই কলেজে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত হয়েছে। তাই শিক্ষার মনোন্নয়ন ঘটছে। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করছে। শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) বিশ্বব্যাংক ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত একটি প্রকল্প। ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে ৩ বছরে এ প্রকল্প ২০২৩ সালে বাস্তবায়িত হয়েছে।এ প্রকল্পের আওতায় কলেজের প্রায় ২২টি ক্লাসরুম, ১৩টি বিভাগীয় অফিস, ১৩টি বিভাগীয় সেমিনার রুম, ১৩টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, ২টি আইসিটি ল্যাব, ১টি সাইন্স ল্যাব, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি আধুনিকায়ন করা হয়েছে। কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের ৪টি ফ্লোরে যুগপযোগী স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে। বড় বিভাগ ২টি ও ছোট বিভাগ ১টি ল্যাপটপ পেয়েছে। ক্যাম্পাস নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে পূরো কলেজে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে।কলেজের ৪টি বিজ্ঞানাগারে আধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ও ব্যবহারিক পরীক্ষার আসবাবপত্র সংযোজিত হয়েছে। অধ্যক্ষের কার্যালয় ও একটি বিশাল কনফারেন্স রুম ইন্টেরিয়রের মাধ্যমে সৌন্দর্য মন্ডিত হয়ে উঠেছে। কলেজে যুক্ত হয়েছে একটি জেনারেটর, আইপিএস এবং সাউন্ড সিস্টেম। কলেজের প্রতি ফ্লোর ও ছাত্র- ছাত্রী হোস্টেলে নিরাপদ পানির আরও ফিল্টার বসেছে ।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওহিদ আলম লস্কার বলেন, সিইডিপি প্রকল্প বাস্তবায়নে কলেজে শিক্ষার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।তাই মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে । বেসিক কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষার্থীরা দক্ষ মানব সম্পদে পরিনত হচ্ছে। কল্যাণকর এ প্রজেক্ট দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও গোপালগঞ্জ সদর আসনের এমপি শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে ধন্যবাদ জানাই।
কম্পিউটার প্রশিক্ষক ও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক ফখরুজ্জামান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বেসিক আইসিটি ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।১ বছর আগে এটি শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৪টি ব্যাচ এ প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করেছে। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা আউটসোসিং, ফ্রিল্যান্সিং করতে পারছে। এ প্রশিক্ষণ আব্যাহত রয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কনা বল্লভ ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান তমা বলেন, কলেজে মান সম্মত ক্লাস রুম, স্যানিটেশন ব্যবস্থা, নিরাপদ পানি, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, বিজ্ঞানাগারসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিয়মিত ক্লাস ও পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।পাঠদানে শিক্ষকরা আন্তরিক। রয়েছে সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা। এ কারণে শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটেছে।
অর্থনীতি বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রোকসানা খানম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র আবুল বাশার বলেন, পড়াশোনারা পাশাপাশি আমরা এখান থেকে আইসিটি প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। এই প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের সারথি হব। কলেজ লাইব্রেরিতে দরকারি বই ও পত্রিকা পড়ছি।পাশাপাশি চাকরির পরীক্ষার অংশ নিতে বাড়তি প্রস্তুতি নিচ্ছি ।
পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র মাহাবুবুর রহমান বলেন, আমি বেসিক আইসটি কোর্স সমাপ্ত করেছি। এখন আমি গ্রাফিক্স ডিজাইন ও আউটসোসিং এর কাজ করে টাকা রোজগার করি। এ টাকায় আমার পড়াশোনার খরচ মেটাতে পারি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী লিয়ার বাবা মো. শিপুল শেখ বলেন, আমাদের সময়ে ক্লাস ফাঁকি দেওয়া যেত। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কলেজে এখন ক্লাস ফাঁকি দেওয়া যায় না। কোন শিক্ষার্থী ৭৫% এর কম উপস্থিতি থাকলে পরীক্ষায় বসতে পারে না। কারণ কলেজের আনলাইন থেকে সে এ্যাডমিড কার্ড পাওয়া যায় না। এখানে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানব সম্পদে পরিনত করা হচ্ছে। এই শিক্ষার্থীরা ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৩:৩৫ ৩৫ বার পঠিত