জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে সরিষাবাড়ীতে ভূমি বিক্রি করে পুনরায় দখলের অপচেষ্টা করছে দাতার পরবর্তী ওয়ারিশগণ। এমন অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ভূমিগ্রহীতা আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া। এঘটনা উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের রায়দের পাড়া আফজালের মোড় এলাকায় ঘটেছে।
ভূমিগ্রহীতা আমিনুল ইসলাম জানান, উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের রায়দের পাড়া গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ৩ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে দুই ছেলে আলিমুদ্দিন ও করিম উদ্দিন ১৯৭৩ সালে একই গ্রামের বাসিন্দা মুজিবর রহমানের কাছে রায়দের পাড়া মৌজা হতে ২০ শতাংশের কাতে সাড়ে ১৩ শতাংশ ভূমি বিক্রি করে এবং পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে মৃত আলী হোসেনের মেয়ে মরিয়ম বেগম তার ওয়ারিশ হতে প্রাপ্ত ১ বিঘা ভূমি হতে ১৯ শতাংশের কাতে সাড়ে ৬ শতাংশ ভূমি বিক্রি করে। যার গ্রহীতা মুজিবর রহমানের স্ত্রী আমেনা খাতুন ও ছেলে আমিনুল ইসলাম।
আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ২০ শতাংশের সাবেক দাগ নং-১৩৩, হাল দাগ নং- ২৩০ এবং ১৯ শতাংশের সাবেক দাগ নং- ৪৪, হাল দাগ নং- ৮৫। ২০ শতাংশের জমিটি আবাদি এবং ১৯ শতাংশের জমিটি বাড়ী। তাই মরিয়ম বেগমের ওয়ারিশগণ ওই সাড়ে ৬ শতাংশ ভূমিতে দখল না দিয়ে মজিবুর রহমানের বাড়ীর পাশে থাকা আবাদি ২০ শতাংশের কাতে সাড়ে ১৩ শতাংশ বিক্রির বাকি অংশটুকু মৌখিকভাবে রেওয়াজ বদল করে দখল দেন মজিবুর রহমান ও স্ত্রী পুত্রকে।
মজিবুর রহমান মুরুব্বীদের মৌখিক রেওয়াজ বদলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং তার চাষাবাদের সুবিধার্থে তিনি সেটি মেনে নেন এবং দীর্ঘ ৪৮ বছর যাবৎ চাষাবাদ করে খেয়ে আসছিলেন।
কিন্তু হঠাৎ ২০২৩ সালে মৃত আলী হোসেনের পরবর্তী ওয়ারিশগণ (বিআরএস) মূলে মজিবুর রহমানের বাড়ির পাশে থাকা ২০ শতাংশ ভূমিতে সাড়ে ৬ শতাংশ ভূমি নিজ মূলে দখল করে। পরে মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম বিবাদীদের ন্যায় সঙ্গত দখল বলে তিনি ভূমিটি ছেড়ে দেন এবং তাদের বসতিবাড়ীতে তার ক্রয়কৃত এবং বিআরএস রেকর্ডভুক্ত সাড়ে ৬ শতাংশ ভূমি রয়েছে বলে ছেড়ে দিতে বলেন তিনি।
কিন্তু তারা ছেড়ে দিতে রাজি নয় বলে এই নিয়ে গ্রাম্য সালিশ বসান আমিনুল ইসলাম। তবুও কোন মীমাংসা না হওয়ায়, তিনি নিরুপায় হয়ে সরিষাবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যাহা তদন্ত দিন রয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও উক্ত বিষয়টি নিয়ে তিনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেনের কাছে একটি নালিশি আরজি পেশ করেছেন বলে জানান।
স্থানীয় শাহ আলম মন্ডল বলেন, আমি এই জমিটি বিক্রির সময় দলিলের চেনা সাক্ষী হয়েছি। আমি জানি তারা এই জমিটি বিক্রি করেছে এবং রেওয়াজ বদল করে খেয়ে আসছিল। এতো বছর পর হঠাৎ কেন আবার বিবাদ সৃষ্টি হল জানিনা।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মুশফিকুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ্দাম হোসেন বলেন, অফিসে উভয়পক্ষই এসেছিল। এ পক্ষের কাগজপত্র পেলেও আরেক পক্ষের উপযুক্ত কাগজপত্র পায়নি। তাই এক মাসের সময় ধার্য করা হয়েছে। উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:১৮:৫৮ ৪৭ বার পঠিত