বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলাদেশের হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং চামড়া খাতে যুক্তরাজ্য ও ইইউভুক্ত দেশের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিনিয়োগের উত্তম জায়গা হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। অনেক দেশ এখানে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ শুরু করছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলের বাইরেও শিল্প কলকারখানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং যুক্তরাজ্যর হাইকমিশনার সারাহ কুক বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিমন্ত্রী এসময় যুক্তরাজ্য ও ইইউভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহবান জানান।
আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, বাংলাদেশ রপ্তানি বহুমুখীকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটজাত এবং চামড়া খাত এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন। এসব খাতে বিনিয়োগের জন্য ইইউ এবং যুক্তরাজ্যের প্রতি আহবান জানান তিনি।
তিনি পাট ও চামড়াজাত পণ্যের পাশাপাশি ফার্মাসিউটিক্যাল বিশেষ করে এপিআই খাত ছাড়াও এগ্রো প্রসেসিং, সি ফুড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, স্বাস্থ্য, বাই সাইকেল, হিমায়িত খাদ্য, কৃষিপণ্যের মান উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
ইইউ এবং যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ থেকে যেসব পণ্য আমদানি করে সেসব পণ্য কন্ট্রাক্ট ম্যান্ফ্যুাকচারিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে উৎপাদনের আহবান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ট্রেড ও রেগুলেটরি সংক্রান্ত বাধা দূর করে আমদানি ও রপ্তানি নীতি যুগোপযোগী করা হচ্ছে। এছাড়া বিনিয়োগ উপযোগি পরিবেশের উন্নয়নে সরকার কাজ করছে এবং বিনিয়োগকারীদের ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদান করা হচ্ছে।
গতকাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে উল্লেখ করে আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এবছর মেলায় বাংলাদেশে অবস্থিত সকল মিশনের প্রধানগণ এবং ট্রেড বা কমার্শিয়াল কাউন্সিলরদের নিয়ে মেলা পরিদর্শনের পরিকল্পনা রয়েছে।
দেশে উৎপন্ন পণ্য প্রদর্শনের সবচেয়ে বড় আসর এই মেলা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে অনেক বিদেশী প্যাভেলিয়নও থাকে। এ মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশী পণ্যের ব্রান্ডিং করা সম্ভব হবে।
সাক্ষাতকালে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আগামী ২৬ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি আবুধাবীতে অনুষ্ঠিব্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা আয়োজিত মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশসমূহের অবস্থানের পক্ষে প্রয়োজনীয় সমর্থনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সহযোগিতা কামনা করেন।
হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। বর্তমানে উভয় দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। উন্নয়ন সহযোগিতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে তিনি অংশীদারিত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন। দক্ষ জনবল তৈরি করার লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে বিশেষ করে ডাক্তার, নার্স, ইঞ্জিনিয়ারসহ পেশাদারী খাতে সার্টিফিকেশন ও অ্যাক্রিডিটেশন সমতায়নে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হাইকমিশনার ।
এছাড়া সারাহ কুক বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণমূলক বাধা দূরীকরণ, সেবা প্রক্রিয়া সহজ করা, মেধাস্বত্বের প্রয়োগ ও সংরক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে উদারীকরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশ সরকার বিদেশী বিনিয়োগের জন্য যেসকল সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তা সত্যিই প্রসংশনীয় উল্লেখ করে ফার্মাসিউটিক্যাল ও আইটি খাতসহ বিভিন্ন খাতে বিনিযোগের আগ্রহ প্রকাশ করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি।
এসময়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৪:৩১ ৪৩ বার পঠিত