রোববার প্রিমিয়ার লিগে টটেনহ্যামের সাথে জিততে পারেনি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। টেবিলের পঞ্চম স্থানে থাকা স্পার্সদের সাথে ইউনাইটেডকে ২-২ গোলের ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। যে কারনে নতুন মালিক জিম র্যাটক্লিফকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে জয় দিয়ে স্বাগত জানাতে পারলো না এরিক টেন হাগের দল।
১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে ক্লাবের ২৫ শতাংশ শেয়ার কেনার পর এই প্রথমবারের মত ইউনাইটেডের ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন র্যাটক্লিফ।
এবারের মৌসুমে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতা ইউনাইটেডের পিছিয়ে পড়ার একটি বড় কারন হয়ে দেখা দিয়েছে। যদিও কাল প্রথমার্ধে দুই স্ট্রাইকার রাসমাস হোলান্ড ও মার্কাস রাশফোর্ডের গোলে দুইবার এগিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি রেড ডেভিলসদের। হালান্ডের গোলের পর রিচার্লিসন সমতা ফেরান। এরপর রডরিগো বেনটানকারের গোলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্পার্স আবারো সমতায় ফিরে।
এই ড্রয়ে টটেনহ্যাম উত্তর লন্ডনের প্রতিদ্বন্দ্বি আর্সেনালের সাথে সমান ৪০ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। যদিও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে শীর্ষ চারের বাইরেই রয়েছে আনগে পোস্তেকোগ্লুর দল। যদিও এই ড্রয়েই তারা সন্তুষ্ট ছিল। ইউনাইটেডের থেকে এই মুহূর্তে টটেনহ্যাম আট পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।
এশিয়ান কাপের জন্য অধিানয় সন হেয়াং-মিন দলের বাইরে রয়েছেন। এছাড়া মূল দলের আরো চারজন নিয়মিত খেলোয়াড় অনুপস্থিত রয়েছেন। টটেনহ্যাম বস পোস্তেকোগ্লু বলেছেন, ‘আমরা আজ যে ধরনের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছি তা ছিল অসাধারণ। কোন সময়ই তাদেরকে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে দেইনি। গত বছরটা আমাদের জন্য মোটেই সহজ ছিল না। খেলোয়াড়দের দৃঢ়তায় আজ আমরা এই পজিশনে এসেছি।’
ব্রিটিশ ধনকুবের র্যাটক্লিফ ম্যাচের শুরুতে বলেছিলেন তার ক্যারিয়ারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ তিনি এই ক্লাবে করেছেন। কিংবদন্তী ম্যানেজার এ্যালেক্স ফার্গুসনকে সাথে নিয়ে ডাইরেক্টর্স বক্সে বসে ম্যাচটি অবশ্য তিনি পূর্ণাঙ্গভাবে উপভোগ করতে পারেননি।
আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টিকে থাকতে হলে স্পার্সদের বিপক্ষে তিন পয়েন্ট পেতে মরিয়া ছিল ইউনাইটেড। শুরুটাও তাদের দারুন হয়েছিল। আটালান্টা থেকে ৭২ মিলিয়ন পাউন্ডে ইউনাইটেডে আসার পর প্রিমিয়ার লিগে প্রথম গোল পেতে হোলান্ডকে ১৫ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। তিন মিনিটে স্পার্স গোলরক্ষক গুগলেইমো ভিকারিওকে পরাস্ত করতে কোন ভুল করেননি এই ড্যানিশ স্ট্রাইকার। নিয়মিত স্ট্রাইকারের অনুপস্থিতিতে ধারে খেলতে আসা টিমো ওয়ার্নারকে মূল দলে জায়গা দিতে বাধ্য হয়েছেন পোস্তেকোগ্লু। এর আগে চেলসিতে সময়টা মোটেই ভাল যায়নি ওয়ার্নারের। যে কারনে পুরনো ক্লাব লিপজিগে ফিরে গিয়েছিলেন। ওয়ার্নারের হেড কোনমতে ফিরিয়ে দিয়ে জনি ইভান্স অভিষেকটা স্মরণীয় করতে দেননি। এর ফলে প্রাপ্ত কর্ণার থেকে বেনটানকারের হেড লাইনের উপর থেকে ক্লিয়ার করেন দিয়েগো ডালট। টটেনহ্যামের সেট পিস হুমকি থেকে শিক্ষা নেয়নি ইউনাইটেড। যে কারনে পেড্রো পোরোর পাস থেকে রিচার্লিসন গোল করে স্পার্সদের সমতায় ফেরান। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিজেদের করে নেয় টটেনহ্যাম। কিন্তু ৪০ মিনিটে আবারো পিছিয়ে পড়ে। গত মে মাস থেকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে গোল করতে না পারা রাশফোর্ড সাম্প্রতিক সময়ে ফর্ম ফিরে পেয়েছেন। হোলান্ডের সাথে বল আদান প্রদান করে ঠান্ডা মাথায় রাশফোর্ড আবারো ইউনাইটেডকে এগিয়ে দেন। এই প্রথমবারের মত একই ম্যাচে হোলান্ড ও রাশফোর্ড গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন। টেন হাগ আশা করছেন এই জুটি যেন ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যায়। বিশেষ করে এর মাধ্যমে কার্যত ইউনাইটেডের আক্রমনভাগই শক্তিশালী হবে। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ওয়ার্নার সুযোগ নষ্ট না করলে বিরতির আগেই টটেনহ্যাম সমতায় ফিরতে পারতো। কর্ণার থেকে ক্রিস্টিয়ান রোমেরোর হেড অল্পের জন্য ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
বিরতির পর অবশ্য সফরকারীদের মোটেই অপেক্ষা করতে হয়নি। এক মিনিটের মধ্যে ওয়ার্নারের সহযোহিতায় বেনটানকার আন্দ্রে ওনানাকে পরাস্ত করেন। ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে ফাঁকায় দাঁড়ানো স্কট ম্যাকটোমিনের হেডের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করায় জয়ী হতে পারেনি ইউনাইটেড।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১২:৩৪ ৪১ বার পঠিত