মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে শুরু হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। মেলা চলবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এ উপলক্ষে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে এক মতবিনিময় সভায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী নুরুল ইসলাম।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানটির অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার। সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপন দেবনাথ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম, ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার ফেন্সি, সনমান্দি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান জিন্নাহ।
মেলা চলাকালীন সময়ে ওই এলাকার যানজট, আইনশৃঙ্খলা ও খাদ্যের মূল্য তালিকা নিয়ে মতবিনিময় সভায় বিস্তারিত আলোচনা ও মতামত প্রকাশ করেন তারা।
প্রতি বছরের মতো এবারও মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হবে সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদের সভাপতিত্বে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে স্টল নির্মান ও মেলার আয়োজনের আনুষঙ্গিক কাজ।
আবহমান গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রতি বছরই মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব আয়োজন করা হয়ে থাকে। দেশীয় সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবনে আয়োজিত মাসব্যাপী এ লোক কারুশিল্প মেলায় কর্মরত কারুশিল্পীদের প্রদর্শনী, লোকজ প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, বাইস্কোপ, নাগরদোলা ও গ্রামীণ খেলাসহ বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়া প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত লোকজ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলা, কর্মরত কারুশিল্পীর কারু পণ্যের প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রদর্শিত হবে।
ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, এবারের মেলায় কর্মরত কারুশিল্পী প্রদর্শনীর ৩২ টি স্টলসহ ১০০টি স্টল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দেশের ১৭ টি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খ্যাতনামা কারুশিল্পীরা সক্রিয়ভাবে এ মেলায় অংশ নেবেন।
মেলায় সোনারগাঁয়ের কারুশিল্পের কারুকাজ, হাতি-ঘোড়া, মমি পুতুল, জামালপুরের তামা-কাঁসা-পিতলের শৌখিন সামগ্রী, সোনারগাঁয়ের বাহারি জামদানি শিল্প, বগুড়ার লোকজ বাদ্যযন্ত্র, কক্সবাজারের শাঁখা ঝিনুক শিল্প, ঢাকার কাগজের শিল্প, রাজশাহীর মৃৎশিল্প, শখের হাঁড়ি, বাটিক শিল্প, খাদিশিল্প, মণিপুরী তাঁতশিল্প, রংপুরের শতরঞ্জি শিল্প, টাঙ্গাইলের বাঁশ-বেতের কারুপণ্য, সিলেটের বেতশিল্প, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সুজনি কাঁথা, কিশোরগঞ্জের টেরাকোটা পুতুল, খাগড়াছড়ি ও মৌলভীবাজারের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কারুপণ্য, মৌলভীবাজারের বেতের কারুশিল্প, ঠাকুরগাঁয়ের বাঁশের কারুশিল্প, মাগুড়া ও ঝিনাইদহের শোলাশিল্প, চট্টগ্রামের তালপাতার হাতপাখা, পাটজাত কারুপণ্য, লোকজ অলঙ্কার শিল্প, নাগর দোলা, বায়োস্কোপ ও মিঠাই-মণ্ডার পসরা থাকবে স্টলগুলোতে।
মেলায় আসা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, ট্যুরিস্ট পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া মেলার পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৪:৪৮ ৫৮ বার পঠিত