যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেস অনুমোদন না দেওয়ায় ইউক্রেনে মার্কিন সহায়তা প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে যদি এই ইস্যুতে কংগ্রেস তার অবস্থান পরিবর্তন করে, কেবল তাহলেই ফের প্রদান করা সম্ভব হবে সহায়তা।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
‘আমরা সহায়তা প্যাকেজ সংক্রান্ত সর্বশেষ যে বিলটি কংগ্রেসে পাঠিয়েছিলাম, সেটি অনুমোদিত হয়নি। তাই আপাতত ইউক্রেনে আমাদের সামরিক সহায়তা স্থগিত রয়েছে। কংগ্রেস যদি অবস্থান পরিবর্তন করে, ফের তা শুরু হবে।’
বিভিন্ন মিত্র দেশে সামরিক সহায়তা বাবদ ১০ হাজার কোটি ডলার চেয়ে কংগ্রেসে গত ডিসেম্বরে একটি বিল পাঠিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন। এই প্যাকেজের মধ্যে ইউক্রেনের জন্য বরাদ্দ ছিল ৬ হাজার কোটি ডলার। কিন্তু সেই বিলটি আটকে দিয়েছে কংগ্রেস।
ডিসেম্বরের শেষ দিকে অবশ্য কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে নিজের প্রেসিডেন্সিয়াল ক্ষমতা ব্যবহারের মাধ্যমে ইউক্রেনে ২৫ কোটি ডলারের একটি সহায়তা প্যাকেজ পাঠিয়েছিলেন বাইডেন, কিন্তু সেজন্য কংগ্রেসে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের তদবিরের জেরে কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাতে রুশ বাহিনীকে নির্দেশ দেন পুতিন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর অস্ত্র ও অর্থ সহায়তায় যুদ্ধের শুরুর দিকে সুবিধাজনক অবস্থায় থাকলেও বর্তমানে বেশ চাপে রয়েছে ইউক্রেন। ইতোমধ্যে দেশটির প্রায় এক চতুর্থাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার দখলে চলে গেছে।
এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সবচেয়ে বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনে ১ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা পাঠিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে বর্তমানে বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠ। যুদ্ধের প্রথম দিকে দলটির সহায়তা প্রদানে আপত্তি না জানালেও গত বছর থেকে তারা আপত্তি জানাতে শুরু করেন। সম্প্রতি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার মাইক জনসন মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য কী এবং এই যুদ্ধ থেকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে লাভবান হতে পারে— এসব ইস্যুতে যদি বাইডেন প্রশাসন সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা না দেয়, তাহলে ইউক্রেনে অর্থ সহায়তা সংক্রান্ত কোনো বিল আর অনুমোদন করবে না মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস।
এদিকে, গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সংকটে ভুগছে ইউক্রেন। এ সংকটের কারণে তাদের সামরিক অপারেশনও কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৫:০৫ ২৭ বার পঠিত