বিপুল উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজধানীসহ সারা দেশে বই বিতরণ উৎসব-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকস্তরের শিশু শিক্ষার্থীরা দেশব্যাপী আনন্দঘন পরিবেশে নতুন বছরের পাঠ্যপুস্তক পেয়ে উল্লাসে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল (সকাল-বিকাল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন প্রধান অতিথি ও মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, নতুন বই শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নতুন বছরের উপহার। নতুন বই শিশুকে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ শিশুকে বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করে তোলে। বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠা শিশুর মনোজগতে বিস্ময় তৈরি করে। শিশুমনের এ আকাক্সক্ষা ধারণ করে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে বই বিতরণের সূচনা। সময়ের পরিক্রমায় এটি এখন বই উৎসবে পরিণত হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার পুরোনো ধারার শিক্ষার খোলনলচে পাল্টে এমন এক নতুন শিক্ষার বীজ বপনের কাজে হাত দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীর মস্তিস্ক ও পিঠ থেকে মুখস্থবিদ্যার বোঝা ঝেড়ে ফলে তাদের কৌতূহল, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগাবে ও নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরিতে উপযোগী করে তুলবে। সে নিজেই নানা চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করবে, তা মোকাবিলা করে অভীষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে।
বর্তমান সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রম অনুসরণে সকল ক্যাটাগরির বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে শতভাগ আকর্ষণীয় নতুন পাঠ্যপুস্তক প্রদান করে আসছে। শিশুদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক আকর্ষণীয় করার জন্য ২০১২ শিক্ষাবর্ষ হতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যপুস্তক হোয়াইট পেপার, কভার পৃষ্ঠা, হিট থার্মাল পারফেক্ট বাইন্ডিংসহ চার রঙের আকর্ষণীয় মানসম্মত পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হচ্ছে। ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ হতে পরিমার্জিত কারিকুলাম অনুযায়ী প্রাথমিকস্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করা হচ্ছে। পরিমার্জিত কারিকুলামে বর্তমান বিশ্ব এবং সমসাময়িক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
২০১০ সন থেকে প্রতি বছর বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে বই বিতরণ উৎসবে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেন। এ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সারা দেশে একযোগে বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশে বই বিতরণ উৎসব উদ্যাপিত হয়ে আসছে।
২০২৪ শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যাঃ প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ৩০ লাখ ৯৬ হাজার ৯৩৯ জন, প্রাথমিকস্তরের ১ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ৫৯৪ জন এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ৮৪ হাজার ৪৭৩ জন। সর্বমোট ২ কোটি ১২ হাজার ৫২ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩ হাজার ৬০৬টি বই বিতরণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৯:১৯ ৫৭ বার পঠিত