আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রার্থীদের আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে বেশ কয়েক জনের শুনানির ফলাফল ঘোষণাও করা হয়েছে।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এসব আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শুরু করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন।
এরইমধ্যে প্রার্থীদের আপিলের রায় পর্যায়ক্রমে দেয়া হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত ২৩টা শুনানির মধ্যে ১৩টা মঞ্জুর হয়েছে।
এ পর্যন্ত যাদের নাম পাওয়া গেছে- টাঙ্গাইল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আহসান হাবীবেব আপিল নামঞ্জুর ও টাঙ্গাইল-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউনুস ইসলাম তালুকদার আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে। এছাড়া টাঙ্গাইল-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ অনুপস্থিত বলা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ-৩ এর আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান ও গোপালগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ কবির মিয়ার আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে।
জামালপুর-২ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী আব্দুল হালিম মন্ডলের আপিল নামঞ্জুর ও জামালপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক জিয়ার আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে।
যশোর-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আক্তারুজ্জামান ও যশোর-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম হাবিবুর রহমানের আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে।
নোয়াখালী-২ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী তালেবুজ্জামানের আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে। ফরিদপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আরিফুর রহমানের আদেশ পরে হবে।
নেত্রকোনা-১ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী ছমীর উদ্দিনের আপিল নামঞ্জুর করা হয়েছে। খুলনা-৬ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধুর আপিল নামঞ্জুর করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল আবদুচ সালামের আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে। বরগুনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খলিলুর রহমানের আপিলও মঞ্জুর করা হয়েছে।
আবেদন নামঞ্জুর হওয়া প্রার্থীরা জানিয়েছেন, প্রার্থিতা ফিরে পেতে দ্বারস্থ হবেন উচ্চ আদালতের। এবারই প্রথম প্রার্থীদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেও আপিল করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। আজ ১০০টির শুনানি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এদিকে গতকাল শনিবার (৯ ডিসেম্বর) প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র নিয়ে রিটার্নি কর্মকর্তার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করার সময়সীমা শেষ হয়। পাঁচ দিনে নির্বাচন কমিশনে ৫৬১টি আপিল জমা পড়েছে।
এ নির্বাচনে অংশ নিতে সারা দেশের ৭৪৭ স্বতন্ত্রসহ মোট দুই হাজার ৭১৬ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা এক হাজার ৯৮৫টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৩১টি বাতিল ঘোষণা করেন। মনোনয়নপত্র বাতিলের হার ২৬ দশমিক ৯২ শতাংশ। আর বৈধ মনোনয়নপত্রের হার ৭৩ দশমিক শূন্য আট শতাংশ।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে গতকাল ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, গত পাঁচদিনে আপিল আবেদন গ্রহণ করেছে ইসি। এবার মোট ৫৬১টি আপিল আবেদন পড়েছে। এর মধ্যে বৈধ হওয়া প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল চেয়েও আবেদন করা হয়েছে।
ইসির তথ্যমতে, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে ও বাতিল চেয়ে প্রথম দিন ৪২ জন, দ্বিতীয় দিন ১৪১ জন, তৃতীয় দিন ১৫৫ জন, চতুর্থ দিন ৯৩ জন এবং পঞ্চম দিনে ১৩০ জন আপিল করেছেন।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ৩০ নভেম্বর। ১ ডিসেম্বর থেকে বাছাই শুরু হয়, যা শেষ হয় ৪ ডিসেম্বর। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:২১:২৯ ৬৪ বার পঠিত #নির্বাচন ২০২৪