ধারের খেলোয়াড় হুয়াও ফেলিক্সের একমাত্র গোলে রোববার লা লিগায় এ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে হারিয়েছে বার্সেলোনা।
এ্যাথলেটিকো থেকে ধারে খেলতে আসা পর্তুগীজ ফরোয়ার্ড অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ২৮ মিনিটে বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন। এই ম্যাচের আগে এ্যাথলেটিকোর বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ফেলিক্সের সমালোচনা করেছেন। বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ অবশ্য তাদের ঐ সমালোচনাকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখার জন্য ফেলিক্সের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন। আর সেটাই কাজে লেগেছে।
এই জয়ে এ্যাথলেটিকোকে হটিয়ে লিগ টেবিলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বার্সেলোনা। এই মুহূর্তে শীর্ষ দুই দল রিয়াল মাদ্রিদ ও জিরোনার থেকে চার পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে বার্সেলোনা।
বার্সা ডিফেন্ডার রোনাল্ড আরাউজো বলেছেন, ‘হুয়াও ফেলিক্স জানিয়েছেন তিনি শান্ত আছেন। এটা তার জন্য শুধুমাত্র আরো একটি ম্যাচ। যেখানে তিনি নিজেকে প্রমান করতে চেয়েছেন। গোল করতে চেয়েছেন, সতীর্থদের এ্যাসিস্ট করতে চেয়েছেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সে খুবই খুশী।’
আরাউজো আরো জানিয়েছেন কোচ জাভির পাশাপাশি পুরো দলের নিজেদের উপর আস্থা আছে। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের খুব একটা মেলে ধরতে পারছে না কাতালান জায়ান্টরা। আরাউজো এ সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমরা নিজেদের দল সম্পর্কে জানি। কোচের সাথে আমরা অনেক কাজ করেছি। কাঙ্খিত ফলাফল না এলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আমরা ভাল করেছি। আজকেও আমাদের জয়ের ব্যপারে আত্মবিশ্বাস ছিল।’
২০০৬ সালের পর থেকে লা লিগার এ্যাওয়ে ম্যাচে এ্যাথলেটিকো বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার বিপক্ষে জিততে পারেনি। এনিয়ে টানা ১৮ ম্যাচে বার্সেলোনার বিপক্ষে জয়বিহীন রয়েছে দিয়েগো সিমিওনের দল। কিন্তু একইসাথে তারা এটাও বুঝতে পারছে যে নিজেদের ফিরিয়ে আনার এটাই যথার্থ সময়।
অক্টোবরের শেষে এল ক্লাসিকোতে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হারের পর থেকে বার্সেলোনা ফর্ম ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে খুব একটা স্বস্তিতে নেই। রিয়াল সোসিয়েদাদ ও আলাভেসের বিপক্ষে তারা ভাল খেলেও কষ্টার্জিত জয় পেয়েছে। ইউরোপে শাখতার দোনেৎস্কের কাছে হেরেছে, রায়ো ভায়োকানোর সাথে ড্র করেছে। এ সপ্তাহের শুরুতে পোর্তোর বিপক্ষে জয়ী হয়েছে বার্সেলোনা স্বরূপে ফিরেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাভি। এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল নিশ্চিত হয়েছে।
কালকের ম্যাচে বার্সেলোনা শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২৮ মিনিটে ডেডলক ভাঙ্গেন ফেলিক্স। নাহুয়েল মোলিনার চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলা করে এ্যাথলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাককে পরাস্ত করেন। সফরকারী ক্ষুদ্ধ সর্মথকদের সামনে গিয়ে ফেলিক্স গোল উদযাপন করেছেন। ২৪ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড ২০১৯ সালে ১২৬ মিলিয়ন ইউরোর রেকর্ড চুক্তিতে এ্যাথলেটিকোতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কখনই সিমিওনের ম্যানেজমেন্ট ও প্লেয়িং স্টাইলের সাথে খাপ খাওয়াতে পারেননি। গোলের পরপরই ফেলিক্সকে ফাউলের অপরাধে এ্যাক্সেল উইটসেল হলুদ কার্ড পান। উজ্জীবিত রাফিনহাকে থামাতে গিয়ে কোকেও লাল কার্ডের হাত থেকে কোনমতে রক্ষা পান। ইকে গুনডোগানের কাট-ব্যাক থেকে ফেলিক্স ব্যবধান প্রায় দ্বিগুন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু এবার ওবলাক তাকে এগোতে দেননি। ঐ শটের পরপরই হারমোসো তার পায়ে পাড়া দিলে ফেলিক্স পেনাল্টির আবেদন করেও সফল হননি। ফিট হয়ে দলে ফিরে আসা পেড্রি ও ফ্রেংকি ডি জংয়ের সাথে মধ্যমাঠে গুনডোগান নিজেকে দারুনভাবে প্রমান করেছে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এ্যাথলেটিকো ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। লিগের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হলেও অলিম্পিক স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দর্শক উপস্থিতি হতাশ করেছে। প্রচন্ড ঠান্ডার কারনে ম্যাচ শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। সাবেক দলের বিপক্ষে ফেলিক্স গোল পেলেও এ্যাথলেটিকোর তারকা আঁতোয়ান গ্রীজম্যান তার পুরনো দলের বিপক্ষে কোনভাবেই গোল আদায় করতে পারছে না। বার্সেলোনার বিপক্ষে এ্যাথলেটিকোর হয়ে ১৪ ম্যাচে গ্রীজম্যান কোন গোল করতে পারেননি। ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনার আরেক সাবেক খেলোয়াড় মেমফিস ডিপে সমতা প্রায় এনেই ফেলেছিলেন। কিন্তু তার শটটি ইনাকি পেনা কর্ণারের মাধ্যমে রক্ষা করেন। রবার্ট লিওয়ানদোস্কির শট পোস্টের বাইরে চলে গেলে লিড বাড়ানো সম্ভব হয়নি। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় বার্সেলোনার হয়ে শেষ ১০ ম্যাচে অভিজ্ঞ এই পোলিশ স্ট্রাইকার মাত্র তিন গোল করেছেন। স্টপেজ টাইমে এ্যাঞ্জেল কোরেয়াকে হতাশ করেন পেনা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৬:৪১ ৭১ বার পঠিত