ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী এরইমধ্যে ইসরাইল ও হামাস পরস্পর জিম্মি ও বন্দি বিনিময় করেছে। চুক্তির অংশ হিসেবে প্রায় সাত সপ্তাহ পর গাজায় বোমা হামলা বন্ধ রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। এই পটভূমিতে প্রায় ৪৮ দিন পর শুক্রবার রাতে নির্ভয়ে রাতে ঘুমাতে পেরেছে গাজার বাসিন্দারা
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিনিধি হানি মাহমুদ দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস থেকে বলেছেন, যুদ্ধবিরতি গাজা উপত্যকার বাসিন্দাদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনেছে। সাত সপ্তাহ ধরে প্রতি রাতে গাজার কোথাও না কোথাও হামলা হয়েছে, প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল দিবাগত রাত ছিল ভিন্ন। এ রাতে হামলা, প্রাণহানি, কান্না বন্ধ ছিল।
মাহমুদ বলেন, ৪৮ দিন পর এই প্রথম কোনো রাতে গাজাবাসী নির্ভয়ে ঘুমাতে পেরেছে।
তিনি বলেন, তবে গাজাবাসী মনে করছে, সাময়িক বিরতির পর আবার ইসরাইলি বাহিনী তাদের ওপর আবার হামলা শুরু করবে। গাজায় প্রায় ১৭ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষ মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। জীবন বাঁচাতে অবরুদ্ধ উপত্যকায় এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছুটে বেড়াচ্ছে তারা। কেউই নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছে না।
হানি মাহমুদ বলেন, গাজাবাসীর মধ্য হতাশা ভর করেছে। তারা ক্ষোভে ফুঁসছে। তাদের প্রশ্ন, নিরাপদে বাড়ি ফেরার সুযোগ দেয়ার শর্তটি কেন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে যুক্ত করা হয়নি?
তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির মধ্যের উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে একটি সামরিক সীমা রেখা টেনে রেখেছে ইসরাইল। শুক্রবার কয়েকজন ফিলিস্তিনি জোর করে উত্তর গাজায় যাওয়ার চেষ্টা করলে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিত অন্তত তিনজন নিহত হয়।
মাহমুদ বলেন, এসব ফিলিস্তিনের বাড়ি উত্ত গাজায়। তারা ফেলে আসা বাড়িঘর দেখার জন্য সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল।
এদিকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুসারে প্রথমদিনে কারাগার থেকে ৩৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। বন্দিদের মধ্যে ২৪ জন নারী ও ১৫ জন তরুণ। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের মুক্তি দেয়া হয়। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাাইক্রোব্লগিং সাইটে এক্স পোস্টে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আল-আনসারি বলেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনের প্রতিশ্রুতি অনুসারে তাদের (৩৯ ফিলিস্তিনি) মুক্তি দেয়া হয়েছে।
কারাগার থেকে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীও। এক এক্স পোস্টে তারা বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনি বন্দিদের ইসরাইলি বাহিনী এবং শিন বেট এজেন্টরা নিয়ে যাচ্ছে।’
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলি হাসপাতালে ফিলিস্তিনিরা তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের সঙ্গে থাকবেন।’
এর আগে স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় ১৩ জন ইসরাইলি নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর পাশাপাশি ১২ জন থাই নাগরিককেও মুক্তি দেয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৬:১৮ ৪৮ বার পঠিত