রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে বাসে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘আন্দোলনের নামে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে। এটা কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি হতে পারে না। তারা সন্ত্রাসী হয়ে গেছে।
এটা রাষ্ট্রের ওপর আঘাত, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এদের প্রতিহত করতে হবে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাসীদের নির্মূলে আমরা বদ্ধপরিকর।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘ধর্মান্ধ ও স্বাধীনতাবিরোধী দলগুলোর রাজনীতি এবং আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। ব্রিগ্রেড ৭১ এই সেমিনারের আয়োজন করে।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৮ অক্টোবর সমাবেশের নামে বিএনপি পুলিশ হত্যা করেছে, ৩২ জন সাংবাদিককে আহত করেছে। যারা এগুলোর মূলহোতা, তাদের কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।
আমরা জানি, তাদের কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এখন তাঁরা কর্মসূচি ঘোষণা করছে অনলাইনের মাধ্যমে। এবং সেই কর্মসূচির মূল হচ্ছে অবরোধের নামে গাড়ি-ঘোড়া পোড়ানো। মানুষের ওপর আক্রমণ করা। এরা দেশ, জাতি ও সমাজের শত্রু।
এ জন্যই তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শেষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত এই গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকবে।’
বিএনপি রাজনীতিকে অপরাধনীতি আখ্যা দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন বিএনপি সারা দেশে সন্ত্রাসের তাণ্ডব শুরু করেছে। ইসরাইল বাহিনী যে কায়দায় গাজায় হাসপাতালে আক্রমণ চালিয়েছে, একই কায়দায় পুলিশ হাসপাতালে আক্রমণ চালানো হয়েছে। রোগীবাহী অ্যাম্বুল্যান্সে হামলা চালিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরা কি মানুষ? এরা কি রাজনৈতিক কর্মী? এদের নেতারা কি রাজনৈতিক দলের নেতা? তারা (বিএনপি) হিংস্র হায়নার চেয়েও খারাপ। তাদের বিরুদ্ধে জনগণকে লড়তে হবে। ১৯৭১ সালে যেভাবে পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছে, তেমনিভাবে এখন তাদেরও প্রতিরোধ করতে হবে।’
ড. হাছান বলেন, ‘অভ্যুদয়ের পর থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। বিদেশি শক্তির সঙ্গে মিলে এরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে তাদের অপচেষ্টা কিছুটা সফল হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে আওয়ামী লীগ ২১ বছর এদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত হয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনার কাজে অনেকেটাই অগ্রসর হয়েছিলাম। ২০০১ সালে আবারও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আন্তর্জাতিক শক্তির সঙ্গে আঁতাত করে ক্ষমতায় আসে। দেশ আবার পিছিয়ে পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে জনগণের ভোটে ভূমিধ্বস বিজয়ের মধ্যে দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। সেই থেকে দেশ আজ পর্যন্ত দেশ উন্নয়নের ধারার এগিয়ে চলছে। আন্তর্জাতিক সম্মেলনগুলোতে বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেছে। আজ মানব উন্নয়ন, অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য সূচকে আমরা পাকিস্তানকে অতিক্রম করেছি। ২০২১ সালে ডিজিপি পার ক্যাপিটাল ইনকামে ভারতকেও পেছনে ফেলেছি। পাকিস্তানের শাসকরা এখন বাংলাদেশে উন্নয়ন দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।’
সেমিনারের ব্রিগ্রেড ৭১ এর আহ্বায়ক রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব ব্যারিষ্টারর সৌমিত্র সরদারের সঞ্চালনায় মূখ্য আলোচক হিসেবে ছিলেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বীর প্রতীক লে. কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুন নূর দুলাল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৬:৩৮ ৩৯ বার পঠিত