ভোক্তা পর্যায়ে আলুর দাম সহনীয় রাখতে রংপুরে খোলা ট্রাকে ৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে আলু। জেলা প্রশাসন এবং আলু চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতি এই উদ্যোগ নিয়েছে। সিটি করপোরেশনসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও চলছে এই কার্যক্রম। সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের ডাকে ৭২ ঘণ্টার টানা অবরোধেও কম দামে আলু পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের মাঝে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) রংপুর নগরীর শাপলা চত্বর, পায়রা চত্বর, সাত মাথা মোড়, কাচারি বাজার, সিও বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা পিকআপভ্যানে করে বিক্রি হচ্ছে আলু; যা কিনতে সাধারণ মানুষের ছিল দীর্ঘ লাইন।
কথা হয় শাপলা চত্বরে আলু কিনতে আসা রাশেদা বেগম, আব্বাস আলী, জয়নাল মিয়া, সালেমা খাতুন ও নাজমা বেগমের সঙ্গে। তারা সময় সংবাদকে জানান, লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে কষ্টে রয়েছেন তারা। বেশিরভাগ সবজির দামই যখন ঊর্ধ্বমুখী তখন শেষ ভরসা ছিল আলু। যদিও সেই আলুও এখন সিন্ডিকেটের দখলে। বর্তমানে বাজারগুলোতে আলু বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৬০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকায়। তবে এই সময়ে এসে স্বস্তি দিচ্ছে ৩৫ টাকা কেজির আলু। তাতে কিছুটা সাশ্রয় হচ্ছে। ওই টাকা দিয়ে অন্য সবজি কিনতে পাচ্ছেন তারা।
একই কথা বলেন সাত মাথা মোড়ে আলু কিনতে আসা আশেক আলী, রুবিনা খাতুন, ও স্বপন মিয়া। তারা বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সময়ে সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তাদের। এই সময়ে ৩৫ টাকায় আলু পাওয়ায় উপকার হচ্ছে। তবে পিকআপভ্যানে যে আলু বিক্রি হচ্ছে; তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই আরও বেশি বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানান, কোল্ড স্টোরেজ থেকে প্রতিদিন ট্রাকে করে আনা হয় এই আলু। প্রতিটি ট্রাকে ৩০ থেকে ৪০ বস্তা আলু আনা হলেও ক্রেতাদের চাহিদা আরও বেশি। তাই আপাতত ১০০ টাকার প্যাকেজে দেয়া হচ্ছে দুই কেজি ৮৬০ গ্রাম আলু।
রংপুর জেলা আলু চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত বনিক সময় সংবাদকে বলেন, জেলা প্রশাসনের ও আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে এই আলু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরও সহযোগিতা করছে। বর্তমানে প্রতিদিন নগরীর পাঁচ থেকে ছয়টি পয়েন্টে এই আলু বিক্রি চলছে। তবে সাধারণ মানুষের চাহিদা অনেক বেশি হওয়ায় বিক্রি করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
তবে নতুন আলু ওঠার আগ পর্যন্ত আগামী নভেম্বর মাস জুড়ে আমরা এই আলু বিক্রির আশা করছি।
রংপুর কৃষি বিপণন অধিদফতরের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বর্তমানে জেলার ৩৯টি হিমাগারে মজুদ আছে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন আলু। যার সিংহভাগই বীজ আলু। তবে নভেম্বরের শেষ দিকে বাজারে নতুন আলু আসলে আলুর সংকট আর থাকবে না বলেও জানান তিনি।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান সময় সংবাদকে বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে সরকারের বেধে দেয়া দাম কার্যকর করতে বাজারগুলোতে নজরদারির পাশাপাশি এই কার্যক্রম জেলাসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে চালু করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ যাতে সঠিক দামে আলু কিনতে পারে আমরা সেটি নিশ্চিত করছি। যতদিন প্রয়োজন আমরা এই সাধারণ মানুষের জন্য এই সেবা চালমান রাখবো।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫২:১৪ ৩৯ বার পঠিত