জামায়াত-বিএনপি বাদে অন্য দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক আচরণ করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।
তিনি বলেছেন, ধানের শীষ আর পেটের বিষ ওটার আমাদের আর খুব বেশি দরকার নেই। জামায়াত-ধানের শীষ বাদে বাকিদের সঙ্গে আপনি রাজনৈতিক আচরণ করুন। আপনার অনেক আচরণ রাজনৈতিক আচরণ হচ্ছে না। আপনি গত পাঁচ বছরে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বসেননি, কথা বলেননি। আপনি দেশ চালাবেন আর দেশে রাজনীতি হবে না, তাহলে আপনি দেশ চালাতে পারবেন না। আপনি দেশের মালিক না, দেশের সেবক। আপনি সেটা মনে রাখবেন।
সোমবার (৯ অক্টোবর) ময়মনসিংহ নগরীর টাউন হলের অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি মিলনায়তনে বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভোটাররা কেন্দ্রে গেলে যুক্তরাষ্ট্র কী করল তা বড় কথা নয়- এমন মন্তব্য করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ভোটে কে এলো কে এলো না, ভোটে আমেরিকা-জার্মান-কানাডা-ইংল্যান্ড কী করল এগুলো বড় কথা নয়। দেশের শতকরা ৭০-৭৫ ভাগ ভোটার যদি ভোটকেন্দ্রে যায়, তারা যদি ভোট দিতে পারে তাহলে আমেরিকা যদি তার দেশ নিয়েও আমাদের ওপরে আসে তাহলে কিছু করতে পারবে না। এজন্য বোন (শেখ হাসিনা) আপনাকে আমি অনুরোধ করি আপনি ভোট সুষ্ঠু করার চেষ্টা করবেন। ভোটে লোককে দাঁড়াতে দেবেন। মানুষ যেন ভোট দিতে যেতে পারে এ ব্যাপারে হেল্প করবেন। ভোটারদের ফেরাবেন না।
তিনি আরও বলেন, আপনার (শেখ হাসিনা) নেতৃত্ব, কর্তৃত্ব এবং সারা পৃথিবীতে আপনার সম্মান রক্ষার একমাত্র প্রতীক হচ্ছে দেশের ভোটাররা। তারা যদি ভোটকেন্দ্রে যায় তাহলে আপনাকে নিয়ে যে যত কথাই বলুক কোনো কিছুই টিকবে না। আপনিই হবেন এই দেশের এবং বিশ্বের জননন্দিত নেতা। সেজন্য ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দিতে হবে। তাহলে আপনার নেতৃত্ব কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। আপনার নৌকা মার্কা ছাড়াও যারা জিতবে তারাই বঙ্গবন্ধুর সৈনিক, তারাই আপনার সৈনিক।
হতাশা ব্যক্ত করে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে দুষ্কৃতকারী ছিলাম। আজকে আমার বোন শেখ হাসিনার আমলেও সরকারি খাতায় দুষ্কৃতকারী। আমি জানতে চাই এই দুষ্কৃতকারী কবে দূর হবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করে আমি অন্যায় করেছি না ন্যায় করেছি এই কথা শেখ হাসিনাকে বলতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করা যদি অন্যায় হয় সেটা বলেন, আমাদেরকে ফাঁসি দেন। সবার আগে আমাকে ফাঁসি দেন, তারপর আমার ভাই লতিফ সিদ্দিকীকে দেন।
তিনি আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগ করেন, তাদের নৌকা চালাইতে হলে গামছা ছাড়া কোনো গতি নেই। চোর, বদমাইশ, ঘুষখোরকে গলায় গামছা বেঁধে টেনে বের করে বিচার করা সোজা। মাজায় গামছা বাঁধলে এক জোয়ানের দশ জোয়ানের শক্তি বাড়ে। এই জন্যই নৌকা চালাতে গামছার দরকার। যদিও এখন সাধারণ নৌকা নেই সব মেশিন হইছে তবুও গামছা বাইন্ধা হালে বসলে জোর অনেক বেশি হবে।
সম্মেলনে ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুর রশিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার, মঞ্জুরুল ইসলাম বিমল, জোবাইদুল ইসলাম বাবু, রিগ্যাম মামুন, আবু সুফিয়ান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১১:৪১ ৪১ বার পঠিত