অতীতের মতো বিএনপির আন্দোলনের জোট জগাখিচুড়িতে রূপ নেবে বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এরই মধ্যে উইকেট পতন শুরু হয়ে গেছে। তাদের দল ও জোটে ঐক্য নেই।
রোববার (১৪ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকের আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির ঘরে ও জোটে ঐক্য নেই। এরই মধ্যে তাদের উইকেট পতন শুরু হয়ে গেছে। ৫৪ দলের জোট এখন ১৪/১৫ দলে রূপ নিয়েছে। কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গত বছর যেভাবে আন্দোলনের জোট জগাখিচুড়িতে রূপ নিয়েছিলো, এবারও তাই হবে। মানুষ এমনটাই মনে করছে।
বিএনপির নির্বাচন ঠেকানোর হুমকিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, আমরা শান্তি প্রিয় নির্বাচন চাই। কিন্তু তারা নির্বাচনে আসবে না। তারা নির্বাচন রুখতে চায়। আমরাও দেখাবো কে কাকে রুখে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন ঠেকানোর সমস্ত ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি বিদেশি দূতাবাসগুলোতে গিয়ে নালিশ করে, এই নালিশ করার প্রবণতা দেশকে ছোট করে।বিদেশিদের ইচ্ছায় বাংলাদেশের নির্বাচন হবে এরকম একটা অবান্তর ধারণা নিয়ে তারা (বিএনপি) এগোচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার একটা কথা বারবার বলেছি, পরিষ্কার বলছি, তাদের (বিএনপির) কর্মসূচির পাল্টাপাল্টিতে আমরা নেই।আমরা একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। সে কারণে আমরা শান্তির সমাবেশ করছি। তারা হুমকি দিচ্ছে নির্বাচন করতে দিবে না।
‘নির্বাচনে তারা আসবে না এটা তাদের ইচ্ছা, নির্বাচন হতে দিবে না-এমন ধরনের আজকে তারা যে সংকল্প ব্যক্ত করে, তারা রুখে দাঁড়াবে, আমরাও দেখব, কে কাকে রুখে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন বানচালের সব ষড়যন্ত্র আমরা রুখে দেবো।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আন্দোলনে যে পথরেখা তারা নিজেরাই সেই পথরেখা থেকে সরে গেছে। তাদের ঘরে এখন অনৈক্য।জোটে এখন অনৈক্য। এই জোটে নেতা নেই, এই আন্দোলনের নেতা নেই, এই নির্বাচনের নেতা নেই। নির্বাচন পর্যন্ত সতর্ক পাহারা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীরা অবস্থান করবে।
বিএনপি ক্ষমতার আশা দেখিয়ে নেতাকর্মীদের নামিয়েছিল মন্তব্য করে কাদের বলেন, বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ দেয়, সেখানে সাত দিন আগে থেকেই নানাভাবে লেপ, কম্বল নিয়ে পিকনিক মোডে তারা অবস্থান করে। এই ধরনের পরিস্থিতি আমরা দেখেছি।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, শোনা যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি আজকে কক্সবাজারের এক প্রান্ত দিয়ে মিয়ানমারের দিকে ধাবিত হচ্ছে। আমাদের অনেক সময় দেখা যায় আমরা খুব বেশি প্রস্তুতি নিয়ে থাকি, খুব বেশি সতর্কতা অবলম্বন করি, বাস্তবে ঘূর্ণিঝড় কেটে যায়। আমরা সেটাই কামনা করি। ঘূর্ণিঝড় হলে কত ভয়ংকর রূপ নেয় অতীতে আমরা দেখেছি। এবার আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি।
বিএনপির রাজনৈতিক ঝড় তোলার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঝড় আসছে, ঝড় আসবে, এর সঙ্গে আমাদের পলিটিক্যাল অপনেন্ট বিএনপির মহাসচিব বলেছেন রাজনৈতিক ঝড় নাকি আসবে। মানুষ সৃষ্ট রাজনৈতিক ঝড়ের অপেক্ষায় আমরা আছি। বিএনপির ঝড়ে নাকি শেখ হাসিনা সরকারের পতন হবে। আসলে বাস্তবতা হচ্ছে এদের এখন আন্দোলন করার ঝড় তোলার সামর্থ্য নেই।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তিদাশ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, উপপ্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম, উপদপ্তর বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৩:০৯ ১০৯ বার পঠিত